মোবারক হোসাইন ধর্মপাশা সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা সদরের ধর্মপাশা সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাবদ ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা রাখা হচ্ছে। এ বাবদ কোনো রসিদও দেওয়া হচ্ছে না। কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুল করিমের নির্দেশে ছাত্র ছাত্রীদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি সংক্রান্ত কাজে দা্য়িত্বে থাকা ওই কলেজের ছয়জন প্রভাষক এই টাকা করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
ধর্মপাশা সরকারি কলেজ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ধর্মপাশা সরকারি কণেজে এইচএসসির একাদশ শ্রেণিতে র্ভতি কার্যক্রম শুরু হয় ।আজ ২০সেপ্টেম্বর র্পযন্ত ৩৮৮জন ছাত্র ছাত্রী এই কলেজে ভর্তি হয়েছে। ভর্তি চলবে আগামীকাল ২১সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ছাত্রছাত্রীদেরকে কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত কার্যক্রমে সহায়তা করার জন্য কলেজের অধ্যক্ষের নির্দেশে কণেজের ছয়জন প্রভাষক দিয়ে গঠন করা হয়েছে ছয় সদস্য বিশিষ্ঠ একটি কমিটি। কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল করিম এই কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। ওই কমিটির সদস্যরা হলেন কলেজের প্রভাষক বরুণ কান্তি চৌধরী,বাবুল মিয়া চৌধুরী,ফারুক হাসান,সুভাষ চন্দ্র সরকার,সৈয়দ জিয়াউল হক ও তাপস চন্দ্র রায় । তাঁরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাবদ দুই হাজার টাকা করে আদায় করছেন । অথচ একই উপজেলার পাশের অন্যান্য কলেজগুলোতে ভর্তি বাবদ টাকা রাখা হচ্ছে এক হাজার ১৫০টাকা থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার দুইশত টাকা। সঙ্গে সঙ্গে রসিদও দেওয়া হচ্ছে।কিন্ত ধর্মপাশা সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির টাকা আদায়ের কোনো রসিদ দেওয়া হচ্ছে না।
কলেজের প্রভাষক বরুণ কান্তি চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, প্রিন্সিপাল স্যারের নির্দেশেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাবদ আমরা ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা করে রাখছি।এ নিয়ে আমাদের কলেজের প্রিন্সিপাল স্যার ইউএনও স্যারের সঙ্গে আলোচনা করেই নাকি এই টাকার পরিমান নির্ধারণ করেছেন বলে আমাদেরকে জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কলেজে ভর্তি হওয়া কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী জানিয়েছে , এইচএসসি একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাবদ আমাদের উপজেলার পাশের অন্যান্য কলেজ গুলোতে এক হাজার ১৫০টাকা থেকে এক হাজার দুইশত টাকা রাখা হচ্ছে । অথচ আমাদের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা করে রাখা হয়েছে। ভর্তি বাবদ কোনো রসিদও আমাদেরকে দেওয়া হয়নি। আমাদের কাছ থেকে যে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়েছে সেই টাকা গুলো আমরা ফেরত চাই। এ ব্যাপারে ইউএনও স্যারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
কলেজের অধ্যক্ষ মো.আবদুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, সবাইকে রসিদ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি কলেজে বাৎসরিক হিসাব করা হয় আর বেসরকারি কলেজে হিসাব হয় প্রতি মাসে মাসে। আমি ইউএনও স্যারের সঙ্গে পরামর্শ করেই একাদশ শ্রেনিতে একবছরের বেতন ও অন্যান্য ফিসহ ভর্তি বাবদ দুই হাজার টাকা করে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.মুনতাসির হাসান সাংবাদিকদের বলেন, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাবদ আমার সঙ্গে ওই কলেজের অধ্যক্ষের কোনোরকম পরামর্শ বা আলোচনা হয়নি। ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ভর্তি বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়ে থাকলে কলেজ থেকে শিক্ষার্থীদেরকে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।