কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ঃকুড়িগ্রামের
উলিপুরে ১টি পৌরসভা ও ১১ টি ইউনিয়ন পরিষদের কাছে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৬'শ ৪৯ টাকার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল রয়েছে। সঠিক সময়ে সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় মাঝেমাঝেই বিদ্যুৎ বিভাগ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় তৃণমূলের সেবা গ্রহণ কারী অনেক মানুষ সরকারের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । অভিযোগ রয়েছে,দফায় দফায় বিল পরিশোধের জন্য চিঠি দিলেও তা আমলে নিচ্ছে না অনেক ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি উলিপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) এস.এম নাসির উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় ইতোমধ্যে দুটি ইউনিয়ন পরিষদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি । আর এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিয়ন পরিষদে আসা সেবা গ্রহীতারা। এদিকে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে বকেয়ার পাহাড় নিয়ে থাকা ইউনিয়ন পরিষদ গুলো তাদের বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে তাদেরও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একাধিক সূত্র জানায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে ৩ লাখ ১০ হাজার ২৭৬ টাকা ও একটি পৌরসভায় ৪৫ হাজার ৩'শ ৭৩ টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল রয়েছে। এর মধ্যে ধামশ্রেনী ইউনিয়ন পরিষদের ৩১ মাসের ১ লাখ ৫৪৫, দুর্গাপুর ইউপি'র ৬ মাসের ১৬ হাজার ৯২, তবকপুর ইউপি'র ২২ মাসের ২০ হাজার ৯৭৪, দলদলিয়া ইউপি'র ৯ মাসের ৮ হাজার ৯৫৮, হাতিয়া ইউপি'র ৮ মাসের ২০ হাজার ৮০৫, ধরনীবাড়ী ইউপি'র ১৩ মাসের ৩৪ হাজার ৩৬৯, বুড়াবুড়ি ইউপি'র ১২ মাসের ৩৪ হাজার ৪৮৩, থেতরাই ইউপি'র ২০ মাসের ৫৮ হাজার ৫৭৬, বজরা ইউপি' ১৮ মাসের ১৫ হাজার ৪৭৪ ও উলিপুর পৌরসভার ১৬ মাসের ৪৫ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এসব ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে বার বার বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য তাগাদা পত্র দিলেও তা আমলে নেয়নি তারা। কার্যতঃ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে যেন অসহায় হয়ে পড়েছে । ইতোমধ্যে থেতরাই ও ধরণীবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে সংযোগ বিছিন্ন করায়, নাগরিকরা দৈনন্দিন সরকারের দেয়া সেবা থেকে বন্চিত হচ্ছে।
অন্যদিকে অনেকেই বলছে, যেখানে সাধারণ মানুষ দু-তিন মাসের বিল বাকী রাখলে জরিমানাসহ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। সেখানে কিভাবে মাসের পর মাস বিদ্যুৎ বিল না দিয়েও সংযোগ সচল থাকে!
ধরণী বাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা এক নাগরিক জানান, কয়েকদিন ধরে জন্ম নিবন্ধনসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা থেকে অনেকেই বন্চিত হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় তারা জন্মসনদ দিতে পারছে না। এ এলাকায় নাগরিক সেবা স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে ঐ ইউনিয়নে পুনঃ সংযোগ দেয়া হয়েছে।
থেতরাই ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের পরিচালক আতিকুর রহমান জানান, বকেয়া পরিশোধ না করায় সংযোগ কেটে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ। ফলে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উলিপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) এস এম নাসির উদ্দীন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে আয়ের একটা উৎস আছে, কিন্ত বার বার চেয়ারম্যানদের চিঠি দেয়া হলেও তারা বিল পরিশোধ করেননা। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে।