insert-headers-and-footers
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/pratidinsangbad2/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121লাইফ সাপোর্ট দিয়ে খুব বেশি সময় রাখা যায়নি একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাহীন আলমকে। সোমবার রাত ১০ টার দিকে পুরান ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন শাহীন আলম। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তার মৃত্যুর খবরটি প্রকাশ করেছেন অভিনেতা জায়েদ খান।
হঠাৎ করেই চলচ্চিত্রে অভিনয়কে বিদায় জানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত এই অভিনেতা। কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, ইসলাম ধর্মের অনুশাসন পুরোপুরি পালন করতেই অভিনয় ছেড়েছি।
মৃত্যুর কয়েকমাস আগে একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছিলেন এ চিত্রনায়ক।
বেশ কয়েকবছর কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন এই অভিনেতা। করোনাকালীন সময়ে কঠিন অর্থ সংকটেও পড়েছিলেন তিনি। উপার্জনের একমাত্র পথ কাপড়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ থাকায় সংসারের সদস্যদের খাবার জোগাড় করতে অসমর্থ হয়ে পড়েছিলেন। আবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলো সপ্তাহে একদিন ডায়ালোসিসসহ ওষুধপত্রের খরচ।
অথচ ঢাকাই সিনেমায় বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার ছিল তার। অভিনয় করে দুহাতে কামিয়েছেন টাকা। ২৭ বছরের অভিনয়ের ক্যারিয়ারে দেড়শোরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
রূপালি জগতের বিত্তবৈভব ছেড়ে হঠাৎ ধর্মে কেন ও কীভাবে মনোযোগী হলেন শাহীন আলম? সেই সাক্ষাৎকারে শাহীন আলম বলেন, আমিতো মুসলমান। পরকালে বিশ্বাসী। আমাকে একদিন না একদিন ওই সর্বশক্তিমানের কাছে ফিরতেই হবে। তখন কী জবাব দেব? একটা মানুষ কত দিন বাঁচে? ধরুন খুব বেশি হলে ১০০ বছর বাঁচব। এরপর তো আল্লাহর কাছে গিয়ে জবাবদিহি করতে হবে। তাই আমি বলব, আগে পরকালের হিসাবের খাতাটা ঠিক রাখতে হবে। এসব বিবেচনা করেই সিনেমা থেকে সরে এসেছি। আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি।
অভিনয় থেকে সরে আসার আরো তিনটি কারণ জানিয়েছিলেন শাহীন আলম। বলেছিলেন, ঢাকাই ছবিতে যখন অশ্লীলতা মহামারি আকার ধারণ করে আর সিনেমা জগতটা নির্মাতার হাতছাড়া হয়ে প্রযোজকদের হাতে চলে যায়, তখন আর অভিনয় চালিয়ে যেতে পারছিলাম না।
আমাকে অশ্লীল দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য চাপ দেয়া হতো। আমি রাজি না হলে পরে দেখতাম কাটপিস জুড়ে দেয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমার বড়ভাই হজ পালন করে এসে আমাকে অনুরোধ করেন, অভিনয় ছেড়ে দিতে। আমিও পরে উপলব্ধি করি আর কতো। সিনেমা থেকে নিজেকে গুটিয়ে পারিবারিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি দেখাশোনা শুরু করি।
শাহীন আলমের রূপালি পর্দাকে আর না বলার পেছনে আরো একটি ঘটনা জড়িয়ে আছে। সেটি হলো, তার প্রাণের চেয়ে প্রিয় মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনা।
এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল না হওয়ার কারণে শাহীন আলমের একমাত্র মেয়ে আত্মহত্যা করে। ওই ঘটনার পর পরই বদলে যেতে থাকেন তিনি। নামাজ আদায়ে মনোযোগী হন। আমূল পরিবর্তন ঘটে তার।
প্রসঙ্গত, মঞ্চনাটকের মাধ্যমে অভিনয়ের শুরু করেন শাহীন আলম। ১৯৮৬ সালে এফডিসির নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান। তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘মায়ের কান্না’, যেটি ১৯৯১ সালে মুক্তি পেয়েছিল। যদিও গোয়েন্দা কাহিনি ‘মাসুদ রানা’ দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখার কথা ছিল তার। অর্থ সংকটে পড়ে বিগবাজেটের ছবিটি ৩০ শতাংশ কাজ হওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায়। তবে ‘নয়া বাইদানি’ ছবিতে অভিনয়ের পর শাহীন আলমকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এছাড়া অমর নায়ক সালমান শাহর সঙ্গে ‘স্বপ্নের নায়ক’ ছবিতে অভিনয় করে আরো বেশি আলোচনায় আসেন এ চিত্রনায়ক।
ক্যারিয়ারে দেড়শোর বেশি ছবিতে অভিনয় করা এ চিত্রনায়কের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঘাটের মাঝি, এক পলকে, গরিবের সংসার, তেজী, চাঁদাবাজ, প্রেম প্রতিশোধ, টাইগার, রাগ-অনুরাগ, দাগী সন্তান, বাঘা-বাঘিনী, আলিফ লায়লা, স্বপ্নের নায়ক, আঞ্জুমান, অজানা শত্রু, দেশদ্রোহী, প্রেম দিওয়ানা, আমার মা, পাগলা বাবুল, শক্তির লড়াই, দলপতি, পাপী সন্তান, ঢাকাইয়া মাস্তান, বিগবস, বাবা ও বাঘের বাচ্চা।