কিশোরগঞ্জে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি এখন নাজুক। তবে নতুন শনাক্তের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা। মৃত্যুর হারও কমেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) রাতে প্রকাশিত রিপোর্টে জেলায় নতুন করে ১০৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
সর্বশেষ এ রিপোর্টে মোট ৫৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে ১০৯ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে। এর বিপরীতে এদিন জেলায় মোট ৭১ জন সুস্থ হয়েছেন।
এছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
ফলে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বর্তমান রোগীর সংখ্যা ৩৬ জন বেড়েছে।
আগের দিন সোমবার (৯ আগস্ট) জেলায় করোনা আক্রান্তের মোট সংখ্যা ছিল ৩১৬৭ জন। এখন জেলায় বর্তমান রোগীর সংখ্যা মোট ৩২০৩ জন।
কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাব থেকে গত ৪ আগস্ট, ৫ আগস্ট, শুক্রবার (৬ আগস্ট), শনিবার (৭ আগস্ট) ও সোমবার (৯ আগস্ট) পাওয়া ২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ৬১ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে।
মোট ৫৫৮ জনের নমুনার মধ্যে বাকি ২৭৬ জনের নমুনা বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাব ও রেপিড এন্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়। এতে মোট ৪৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে সোমবার (৯ আগস্ট) ৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে।
এছাড়া কিশোরগঞ্জ বক্ষব্যাধি ক্লিনিক এবং হোসেনপুর, করিমগঞ্জ, তাড়াইল, ভৈরব, নিকলী ও অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ১৯৪ জনের রেপিড এন্টিজেন টেস্টে ৪১ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে।
জেলায় নতুন করোনা শনাক্ত হওয়া মোট ১০৯ জনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৫৭ জন শনাক্ত হয়েছেন।
এছাড়া বাকি ৪২ জনের মধ্যে হোসেনপুর উপজেলায় ৭ জন, করিমগঞ্জ উপজেলায় ২ জন, তাড়াইল উপজেলায় ২ জন, পাকুন্দিয়া উপজেলায় ১ জন, কটিয়াদী উপজেলায় ২ জন, কুলিয়ারচর উপজেলায় ৩ জন, ভৈরব উপজেলায় ২৬ জন, নিকলী উপজেলায় ৫ জন, মিঠামইন উপজেলায় ১ জন এবং অষ্টগ্রাম উপজেলায় ৩ জন শনাক্ত হয়েছেন।
নতুন সুস্থ হওয়া ৭১ জনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সর্বোচ্চ ৪৫ জন রয়েছেন।
এছাড়া বাকি ২৬ জনের মধ্যে বাজিতপুর উপজেলার ৮ জন, মিঠামইন উপজেলার ৫ জন এবং অষ্টগ্রাম উপজেলার ১৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
সর্বশেষ মারা যাওয়া দুইজনের মধ্যে দুইজনই পুরুষ। তাদের একজন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার (৮৫) এবং একজন বাজিতপুর উপজেলার (৭০)।
দুইজনই কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে বর্তমানে আক্রান্ত ও সন্দেহজনক মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৮৪ জন যাদের মধ্যে ৯ জন আইসিইউতে এবং ১৫ জন এইচডিইউতে রয়েছেন।
গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ৩০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং ২৭ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।
হাসপাতালটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
এই সময় পর্যন্ত জেলায় মোট ১০ হাজার ৬৬০ জন শনাক্ত, ৭ হাজার ২৭৩ জন সুস্থ এবং ১৮৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
বর্তমানে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ৩২০৩ জন। তাদের মধ্যে ৫০ জন হাসপাতালে ও ৩১৫৩ জন হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।
বর্তমানে করোনা আক্রান্ত মোট ৩২০৩ জনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৯৭৯ জন, হোসেনপুর উপজেলায় ২৫১ জন, করিমগঞ্জ উপজেলায় ৪৪ জন, তাড়াইল উপজেলায় ৫০ জন, পাকুন্দিয়া উপজেলায় ২৬৬ জন, কটিয়াদী উপজেলায় ৫৪২ জন, কুলিয়ারচর উপজেলায় ৬৬ জন, ভৈরব উপজেলায় ৬৫৮ জন, নিকলী উপজেলায় ৫৫ জন, বাজিতপুর উপজেলায় ১৭৭ জন, ইটনা উপজেলায় ৩১ জন, মিঠামইন উপজেলায় ৩০ জন এবং অষ্টগ্রাম উপজেলায় ৫৪ জন রয়েছেন।
জেলায় মোট মৃত্যু ১৮৪ জনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৬৫ জন, হোসেনপুর উপজেলায় ৮ জন, করিমগঞ্জ উপজেলায় ৯ জন, তাড়াইল উপজেলায় ৫ জন, পাকুন্দিয়া উপজেলায় ১১ জন, কটিয়াদী উপজেলায় ১৬ জন, কুলিয়ারচর উপজেলায় ৭ জন, ভৈরব উপজেলায় ৩৮ জন, নিকলী উপজেলায় ৭ জন, বাজিতপুর উপজেলায় ১৬ জন, ইটনা উপজেলায় ১ জন এবং মিঠামইন উপজেলায় ১ জন রয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।