Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the insert-headers-and-footers domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/pratidinsangbad2/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
কিশোরগঞ্জে কিশোর-কিশোরী ক্লাব সময়োপযোগী অনন্য একটি উদ্যোগ – Pratidin Sangbad

কিশোরগঞ্জে কিশোর-কিশোরী ক্লাব সময়োপযোগী অনন্য একটি উদ্যোগ

কিশোরগঞ্জঃ কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে একটি করে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে তাদের মধ্যে
সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিশোর-কিশোরীদের ওই ক্লাবগুলোতে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, যৌতুক প্রতিরোধ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, বিয়ে নিবন্ধন, শিশু অধিকার, নারী অধিকার, জেন্ডারভিত্তিক বৈষম্য দ‚র করা, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধসহ নানা বিষয়ে তাদেরকে ধারণা দেওয়া হচ্ছে। যেন পরিবার, সমাজ ও সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে এর প্রভাব ইতিবাচক
ভ‚মিকা রাখতে পারে।
শুক্রবার বিকেলে জেলা সদরের মাইজখাপন ইউনিয়নের নীলগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় মাইজখাপন কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সদস্যদের নানা প্রতিযোতিানুষ্ঠান। এ ক্লাবের একজন কবিতা আবৃত্তি শিক্ষক ও কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী কায়েস আখন্দ সংগীত শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জেন্ডার প্রমোটার হিসেবে সোমা আক্তার দায়িত্ব পালন করছেন। ক্লাবে ৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে আর ওই ক্লাবে সপ্তাহে ছুটির দিনে শুক্র ও শনিবারে দুই দিন কিশোর-কিশোরীদেরকে নিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়ে থাকে। বিদ্যালয়ের একটি রুমে শিক্ষার্থীর মধ্যে বাল্যবিয়ের কুফল বিষয়ে আলোচনা
করছেন ওই ক্লাবের জেন্ডার প্রমোটার সোমা আক্তার। তিনি বলেন, বাল্যবিয়ের কুফল, এলাকায় বাল্যবিয়ের আয়োজন হলে কি করণীয়, নিজ পরিবারে বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করাসহ এমন একাধিক বিষয় নিয়ে আজ কিশোর-
কিশোরীদের সঙ্গে কথা বলেছি। কথা হয় মাইজখাপনের সদ্য নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম
আজাদ তারুর সাথে। তিনি বলেন, কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গীত ও আবৃত্তি শিক্ষা প্রদানের মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগ সৃষ্টি হবে। আর এ ধরনের বিনোদনের ফলে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে তারা দ‚রে থাকবে।
আমাদের এলাকার অনেক ইতিহাস জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে কবি চন্দ্রাবতী।

এছাড়া তেভাগা আন্দোলনে আমাদের ইউনিয়নের বিপ্লবীরা প্রতিদবাদী হয়েছিলেন। আজকে বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এ ক্লাবের আয়োজন একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগে থাকতে পেরে নিজেও গর্বিতবোধ করছি।

ক্লাবের সংগীত শিক্ষক কায়েস আকন্দ বলেন, মাইজখাপনে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠার ফলে তারা প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে আর ভালো কিছু করার প্রেরণা যোগানোর পাশাপাশি তাদের মধ্যে দেশপ্রেমও জাগ্রত হবে। সাহিত্য
সংস্কৃতির দিকে উৎসাহিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। নীলগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল জানান, কিশোর কিশোরী ক্লাব সময়োপযোগী অনন্য একটি উদ্যোগ। কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সাফল্য নিশ্চিত করতে সব সময় পাশে আছি আমরা।

এলাকার সমাজসেবক তৌহিদুল ইসলাম বলেন , এ ক্লাবের মাধ্যমে কিশোর- কিশোরীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে, নিজের অধিকার নিয়ে সচেতন হবে, বাল্যবিয়ে মুক্ত মাইজখাপন গঠনে ভ‚মিকা রাখবে বলে আশা করি। তার এ কথার প্রতি সমর্থন জানিে ছেন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রুমা আক্তারও। আজকের ক্লাবের বিজয়ের আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতি কিশোরগঞ্জ সংস্কৃতি মঞ্চের সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, বাচ্চাদের সংস্কৃতিচর্চার প্রতি আগ্রহী দেখে খুব ভালো লেগেছে। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের বিচারক শিল্পী নিরব রিপন ও কবি শামীম রেজা বলেন, আজকে এমন ক্লাবের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অভিভূত হয়েছি। বিশেষ করে এমন মফস্বল গ্রামের কিশোর কিশোরীদের অদম্য মেধা ও তাদের চমৎকার পরিবেশনা ছিলো মনো মুগ্ধকর। প্রতিযোগীতানুষ্ঠানের পর্যবেক্ষক মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষন পরিষদ ও পাঠাগারের সভাপতি আমিনুল হক সাদী বলেন, আমাদের মহিনন্দ ও মাইজখানপন এক সময়ে একত্র ছিলো। ১৯৫৯ সালে ইউনিয়ন দুটি পৃথক হলেও সাহিত্য সংস্কৃতিতে কোনো ভাগ হয়নি। আজকের অনুষ্ঠানের প্রতিযোগীদের অংশ গ্রহণে তাদের
পরিবেশনা ছিলো প্রশংসনীয়। তারা এ ধরনের কার্যক্রমে সব সময় পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। পরিশেষে বিজয়ীদেরকে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিরা। এ সময় ক্লাবের কার্যক্রম দেখতে স্থানীয় উৎসুখ জনতার ভীড় ছিলো লক্ষনীয়।