Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the insert-headers-and-footers domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/pratidinsangbad2/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
নিকলীর ঐতিহ্যবাহী চন্দ্রনাথ গোসাইয়ে আখড়া – Pratidin Sangbad

নিকলীর ঐতিহ্যবাহী চন্দ্রনাথ গোসাইয়ে আখড়া

 

নুরুল আমীন:কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা সদর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে অনুমানিক অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম পাদে নির্মিত যোগীসিদ্ধা চন্দ্রনাথ গোসাইর মন্দির, সমাধি ও যোগী সম্প্রদায়ের বিরাট আখড়া রয়েছে । এককালে এ আখড়াটিই ছিল এদেশের যোগী সম্প্রদায়ের বিখ্যাত কেন্দ্র। বিগত শতাব্দীতে উক্ত আখড়া থেকে নাথযোগীদের দুস্প্রাপ্য ধর্মীয় হাড়মালার হস্ত লিখিত পান্ডুলিপি পাওয়া গিয়েছিল ।
শৈব, বোদ্ধ, তান্ত্রিক,সহজিয়া ও যোগী এ কয়টি ধর্মমতের সমন্বয়ে উদ্ভূত ধর্মই নাথধর্ম। এ ধর্মের মূল হলো মানবদেহ। দেহেই বিশ্বব্রহ্মান্ডের ন্যায় নিয়ত সৃষ্টিকর্ম চলছে অর্থাৎ মানব দেহই বিশ্বব্রহ্মান্ডের ক্ষুদ্ররুপ বা অংশ। অপরিপক্ক দেহকে যোগ বা সাধনার দ্বারা পরিপক্ক করতে পারলে শিবত্ব বা অমরত্ব লাভ করা যায়। এই অমরত্ব লাভের সাধনার নামই ‘যোগ’। যোগসাধনপ্রন্থী উক্ত সম্প্রদায়েরর গুরু ছিলেন মীননাথ । গুরুদের নামের শেষে ‘নাথ’ থাকায় ‘নাথযোগী’ সম্প্রদায় নামে পরিচিত। সাধক পদ্ধতির ভিন্নতায় নাথপন্থিরা নাথযোগী, কাপালীযোগী ও অবধূতযোগী শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল। সিদ্ধাছাড়া অন্যান্যরা গৃহী। সিদ্ধাযোগী ও যোগিনীরা বিশেষ ধরনের পরিচ্ছদ, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ও কালে কুন্ডল পড়ে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াতো এবং গোরক্ষনাথ, গোপীচন্দ্রের সন্যাস, নাথগীতিকা, দোহা ইত্যাদি নাথ ধর্মের মাহাত্মামূলক গান পরিবেশন করে ভিক্ষালব্দ অন্নে জীবিকা নির্বাহ করতো।
মধ্যযুগে উত্তর ও পূর্ব বাংলার নাথ ধর্মের প্রবল প্রভাব এবং প্রসার কালে কিশোরগঞ্জের নিকলী থানার ষাইটধার ও মিঠামইনের ঘাগড়া নাথ যোগীদের প্রধান পীঠ স্থানে পরিনত হইয়েছিল। ফলে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও অন্যান্য কারণে ষোড়শ শতাব্দীর দিকে নাথ ধর্ম বিলুপ্তির পথে গেলেও ঊল্লেখিত দুটি এলাকায় দীর্ঘকাল পর্যন্ত এ সম্প্রদায়ীদের প্রভাব প্রতিপত্তি অক্ষুন্ন ছিল । আলোচিত যোগীসিদ্ধা চন্দ্রনাথ গোঁসাইর সঠিক কাল নির্ণয় করা না গেলে তাঁর প্রধান শিষ্য সিদ্ধাযোগী আদুরী নাথের কাল ধরে চন্দ্রানাথকে সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম পাদের লোক বলে ধরে নেয়া যায়। আখড়াটি বিরাট। মন্দিরের সুঊচ্চ চুড়া বহুদূর থেকে দেখা যায় ।