আজ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হঠাৎ মুখ বেঁকে যাওয়া স্ট্রোক নয় বেলস পলসি

ডেস্ক: সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠার পর দেখলো মুখের এক পাশ দূর্বল, কেমন জানি কথা জডিয়ে যাচ্ছে, আয়নার সামনে গিয়ে দেখলেন মুখ টা একদিকে বেকে গেছে। এক চোখ বন্ধ করতে পারছেনা। অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে যান। চিকিৎসক রোগীর কাছে কিছু হিস্ট্রি বা ইতিহাস জানতে প্রশ্ন করেন। যেমনঃ রোগীর ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেসার আছে কিনা? ঠান্ডা লেগেছে কিনা, কানে অপারেশন বা কোন ইনফেকশন আছে কিনা, ফুসফুসের রোগ আছে কিনা ইত্যাদি সব গুলো নেগেটিভ পাওয়া গেলে চিকিৎসকরা এটাকে সাধারণ রোগ যাকে বলেন যার নাম হলো বেলস পলসি।

তবে লক্ষন গুলো স্ট্রোক সহ ব্রেনের রোগ ও কানের রোগ, প্যারোটিড গ্লান্ড এর টিউমার ইত্যাদি কারনে এমন লক্ষন দেখা দেয় তবে সেটা আর বেলস পলসি এক নয়। বেলস পলসি সাধারণত কারন অজানা থাকে। সুনির্দিষ্ট কোন কারন পাওয়া যায় না। তবে কেউ কেউ বলেন ভাইরাল ইনফেকশন বা ঠান্ডা জনিত কারনে হতে পারে। ডায়াবেটিস, গর্ভাবস্থায়, উচ্চ রক্তচাপ, স্থুলতা থাকলে অধিক ঝুঁকিতে থাকে। এ রোগ হয় মুখের স্নায়ু বা ফেসিয়াল নার্ভের মোটর অংশের কার্য ক্ষমতা ক্ষতি গ্রস্থ হলে। যা সাধারণত অস্থায়ী থাকে। তবে স্ট্রোক এর মত মনে হলেও এটি স্ট্রোক নয়। এ রোগ সাধারণত পুরোপুরি ভালো হয়ে যায় তার জন্য দ্রুত চিকিৎসক এর পরামর্শ নিয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে বিলম্ব করলে পুরোপুরি সুস্থ হতে বিলম্ব হয় বা আংশিক অসুস্থ থেকে যায়।

এ রোগ নির্নয়ের জন্য তেমন পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রয়োজন হয় না তবে সঠিক ইতিহাস নিতে হবে। কোন সুনির্দিষ্ট কারন আছে কিনা নিশ্চিত হতে বিশেষ কিছু পরীক্ষা করানো লাগতে পারে। স্ট্রোক এর ক্ষেত্রে একাধিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হয় ফলে শরীরের একাধিক অঙ্গ অবশ কিংবা প্যারালাইসিস হয় যেমন দেহের একপাশ হাত পা পুরো অবস হতে পারে কিন্তু বেলস পলসি তে শুধু মাত্র মুখের স্নায়ু , ফেসিয়াল নার্ভ অকেজো হয় ফলে লক্ষন শুধু মুখ ও চোখ কপালে সীমাবদ্ধ থাকে। যথা সময়ে সঠিক চিকিৎসা নিলে ২-৩ সপ্তাহে সুস্থ হয়ে উঠে। ক্ষেত্র বিশেষে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে এ রোগ বার বার হতে পারে। মুখের এক পাশেই সাধারণত আক্রান্ত হয় তবে খুব কম সংখ্যক রোগীর উভয় পাশ আক্রান্ত হতে পারে। ১৮২৯ সালে স্কটল্যান্ড এর সার্জন চার্লস বেল সর্বপ্রথম এ রোগ নির্নয় করেন বলে তার নামে এ লক্ষন কে বেলস পলসি বলে। বেলসি পলসি হলে চোখ খোলা থাকে তাই চোখ কে রোদ থেকে বাচাতে সান গ্লাস ব্যবহার করতে হবে, ড্রাইনেস কমাতে চোখের ড্রপ দিতে হবে। প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপি নিতে হবে। তাই কারো এমন সমস্যা হলে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসক এর পরামর্শ নিন। এ ক্ষেত্রে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ, নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞ বা ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিতে পারেন।

ডা. মুহাম্মদ আবিদুর রহমান ভূঞা, আবাসিক চিকিৎসক, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ কিশোরগঞ্জ।01711-700152

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ