insert-headers-and-footers
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/pratidinsangbad2/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
কিশোরগঞ্জের ইটনায় বাড়ি দখলকে কেন্দ্র করে গৃহবধূর উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় হামলার শিকার ঐ গৃহবধূ বর্তমানে ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রবিবার সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার এলংজুরী ইউনিয়নের ছিলনী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ (৩৫) এলংজুরী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য। অপরদিকে হামলার শিকার গৃহবধূর নাম রুহেনা আক্তার (২৫)। তিনি ছিলনী গ্রামের দিনমজুর এমাদ মিয়া স্ত্রী।
রুহেনার ননদ তাজবীন আক্তার জানান, তার বাবা মারা গেছেন বিশ বছর আগে। এরপর থেকে তাদের মা বহু কষ্ট করে পাঁচ বোন আর এক ভাইকে বড় করেছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে জিন্নাহ মেম্বারের বাপ-চাচারা তাদের একমাত্র সম্বল বসতবাড়িটা দখল করার চেষ্টা করে আসছে। এরই মধ্যে অল্প অল্প করে অনেকটা দখল করে ফেলেছে। আজ সকালে আবারও একটা ঘর তুলতে চেয়েছিল। বাড়িতে কেউ না থাকায় মা গিয়ে নিষেধ করায় জিন্নাহ তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে তার ভাবী রুহেনা ঘর থেকে বের হয়ে প্রতিবাদ করলে জিন্নাহ তার হাতে থাকা দা দিয়ে মাথায় কোপ দেয়। এ সময় জিন্নাহর বাবা পানজু, চাচা জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্যরা এলোপাতাড়ি মারপিট করে। তাজবীন জানান, পরে প্রতিবেশীরা এসে উদ্ধার করে তাকে ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। রুহেনার মাথায় ৭ টা সেলাই লেগেছে। ডাক্তার জানিয়েছেন তাকে কিশোরগঞ্জে নিয়ে যেতে হবে।
রুহেনার শ্বাশুড়ী গুলেস্তা বেগম জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তাদের বসতবাড়িটা দখল করার চেষ্টা করছেন জিন্নাহ ও তার চাচারা। এজন্য বিভিন্ন সময়ে তাদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে আসছে। মাঝে মধ্যে চলাফেরার ক্ষেত্রেও বাধা-নিষেধ দেয়। তবে গত নির্বাচনে পাশ করার পর থেকে অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, আজ সকালে তারা যে ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে তাতে মনে হয়েছে সন্তানদের নিরাপত্তার চিন্তা করে হলেও বাড়িটা ছেড়ে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পরে কত অভাব-অনটনের মধ্যে দিন পার করেছি তারপরেও স্বামীর বসতভিটা বিক্রি করিনি। আমার পাঁচ মেয়ে এক ছেলে বড় হয়েছে, তাদের সবার বিয়ে দিয়েছি। এখন যদি স্বামীর রেখে যাওয়া বসতভিটাটা ছেড়ে দিতে হয় তবে এর চেয়ে বড় কষ্ট আর কী হতে পারে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী জানান,এই অসহায় পরিবারটিকে গ্রাম ছাড়া করতে বহু আগে থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে জিন্না চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বহুবার দেন দরবারও হয়েছে। বাড়িটা কেনার জন্য কয়েকবার প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তুু গুলেস্থা বেগম তার স্বামীর ভিটা বিক্রি করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এরপর থেকে দখলের পায়তারা করে আসছে সে। আর আজ দখলে ব্যর্থ হয়ে তাদের উপর হামলা করেছে।
এ বিষয়ে জানতে ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জিন্নার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার চাচা ইকবাল হোসেনের নাম্বারে কল করা হলে তিনি জানান, বাড়িতে গণ্ডগোল হয়েছে এটা তিনি শুনেছেন। এর বাহিরে কিছু বলতে পারবেন না।
এলংজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন রুবেল জানান, গৃহবধূর উপর হামলার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ঘটনার সত্যতা এবং মেম্বারের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার ডা. ইশতিয়াক হোসেন রাফিদ জানান, রুহেনাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তার মাথার আঘাতটা গুরুতর। সাতটা সেলাই লেগেছে।
ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মোল্লা জানান, হামলার বিষয়টি তিনি ডিউটি অফিসারের মাধ্যমে জেনেছেন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ নিয়ে এখনও কেউ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।