Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the insert-headers-and-footers domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/pratidinsangbad2/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
কিশোরগঞ্জে স্ত্রীর প্রতারণায় নিঃস্ব প্রবাসী স্বামী, সংবাদ সম্মেলনে আকুতি – Pratidin Sangbad

কিশোরগঞ্জে স্ত্রীর প্রতারণায় নিঃস্ব প্রবাসী স্বামী, সংবাদ সম্মেলনে আকুতি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের বৈরাগীর চর গ্রামের আব্দুল আওয়ালের ছেলে মো. নবী হোসেন (৪২) দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরেন গত ২১শে এপ্রিল। এর চারদিন পর গত ২৫শে এপ্রিল ব্যাংকে যান বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা তুলতে। কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন, স্ত্রী মোছা. রুমা আক্তারের কাছে পাঠানো প্রায় ৪০ লাখ টাকার এক টাকাও ব্যাংকে জমা হয়নি। ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে স্ত্রী রুমা আক্তার প্রবাসী স্বামীকে টাকা জমা দেয়ার একের পর এক ভুয়া রশিদ ইমু নম্বরে পাঠিয়ে গেছেন। স্ত্রীর এমন প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে হতবাক হয়ে যান নবী হোসেন। স্ত্রী রুমা আক্তারকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেই স্বামী নবী হোসেনকে টাকার বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন তিনি।

এ নিয়ে পারিবাহিক কলহের এক পর্যায়ে স্ত্রী রুমা আক্তার গত ১০ই মে আদালতে ঠুকে দেন স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক দাবির মামলা। প্রতারণার মাধ্যমে স্ত্রী প্রবাস জীবনের সমুদয় উপার্জন হাতিয়ে নেয়ায় নবী হোসেন এখন নিঃস্ব। এ রকম পরিস্থিতিতে স্ত্রীর প্রতারণা, বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ ও মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিকার চেয়েছেন প্রবাসী স্বামী নবী হোসেন। সোমবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের গৌরাঙ্গবাজারে অনলাইন নিউজ পোর্টাল কিশোরগঞ্জ নিউজ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মো. নবী হোসেন জানান, ২০০০ সালে কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের অষ্টঘরিয়া গ্রামের মো. ইসলাম মিয়ার মেয়ে মোছা. রুমা আক্তারকে তিনি বিয়ে করেন। তাদের সংসারে সাজিদ মোহাম্মদ (১৯) ও ইসরাত জাহান ঋতু (২০) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। জীবিকার তাগিদে নবী হোসেন ২০০৮ সালে দুবাই যান।

দীর্ঘ ১৫ বছরের প্রবাস জীবনের মধ্যে ২০১৮ সালের মার্চে তিন মাসের ছুটিতে তিনি দেশে এসেছিলেন। ছুটি শেষে দুবাই চলে যাওয়ার পর সেখান থেকে স্ত্রী রুমা আক্তারের কাছে ধাপে ধাপে মোট ৩৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ইসলামী ব্যাংক কটিয়াদী শাখায় নবী হোসেনের একাউন্ট নম্বরে জমা দেওয়ার জন্য পাঠান। প্রতিবারই টাকা পাঠানোর পর স্ত্রী রুমা আক্তার ব্যাংকে স্বামীর একাউন্টে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ স্বামী নবী হোসেনের ইমু নম্বরে পাঠাতেন। কিন্তু ঘূর্ণাক্ষরেও নবী হোসেন ভাবতে পারেননি, স্ত্রী রুমা ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার যেসব রশিদ তার কাছে পাঠাচ্ছেন, সেগুলো ভুয়া রশিদ। দেশে এসে যখন বিষয়টি জানতে পারেন তখন সর্বস্ব হারিয়ে তিনি নিঃস্ব।

এ নিয়ে স্ত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে মতবিরোধ সৃষ্টি হলে নবী হোসেন কটিয়াদী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু তাতেও কোন প্রতিকার পাননি। এক পর্যায়ে গত ১০ই মে স্ত্রী রুমা আক্তার কিশোরগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলগ্রহণকারী আদালত নং-৫ এ স্বামী নবী হোসেনকে আসামি করে ২০১৮ সনের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় মামলা দায়ের করেন। এ পরিস্থিতিতে প্রবাসী নবী হোসেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তিনি একবার আত্মহত্যা করতেও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন বুঝতে পারায় তিনি প্রাণে রক্ষা পান। স্ত্রীর প্রতারণায় জীবনের সমুদয় উপার্জন আর পারিবারিক জীবন হারিয়ে এখন কেবল কান্নাই তার একমাত্র নিয়তি। এ অবস্থার আইনি প্রতিকার চান নবী হোসেন।

তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ সহযোগিতার জন্য আকুতি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে প্রবাসী নবী হোসেনের ছোট বোন নিপা ও তার স্বামী মো. সেলিম উপস্থিত ছিলেন।