নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জে যৌতুকের দায়ে স্ত্রী হত্যার চঞ্চল্যকর মামলার কারারক্ষী স্বামী খাইরুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২০জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার বাইচাইল গ্রামের আ: মজিদের ছেলে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এম এ আফজাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়,কারারক্ষী খায়রুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে সুত্র ধরে প্রথমে প্রেম পরবর্তীতে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় কলেজ পড়ুয়া রুমা আক্তার (২২) বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই কারারক্ষী স্বামী খায়রুলের সাথে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের কোয়ার্টারে ওঠেন রুমা।কিন্তু বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য রুমাকে নানাভাবে নির্যাতন করে খায়রুল। মামলার বাদী রুমার মা প্রবাসী স্বামী দেশে না থাকায় যৌতুক বাবত তিন লক্ষ টাকা দেই কিন্তু আসামী খায়রুলের মন ভরে নাই, আবার মোটরসাইকের জন্য দুই লক্ষ আশি হাজার টাকা দাবি করে আমার মেয়েকে কারাগারের কোয়ার্টারে এলোপাতারী কিলঘুষি ও লাথি মারিয়া নীলাফুলা জখম করে। একপর্যায়ে আসামী যৌতুক জন্য আমার মেয়ে রোমা আক্তারকে হত্যার উদ্দেশ্যে কৌশলে বিষ বা বিষ জাতীয় কোন কিছু খাওয়াইলে আমার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ্য হইয়া পড়ে। তখন আমি সংবাদ পাইয়া আমার বড় মেয়ে সুমা আক্তার (২৫) কে সঙ্গে নিয়া কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগার-১ এর ভিতরে আসামীর সরকারী কোয়াটারে আসিয়া আমার মেয়েকে অসুস্থ অবস্থায় পাই। কোয়ার্টারে বসবাসরত অন্যান্যদের জিজ্ঞাসা করিলে তাহারা আমার মেয়েকে মারপিট করার বিষয়টি জানায়। পরে আমার মেয়েকে চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়া আসিলে কতব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়া আমার মেয়েকে মারপিট করা এবং বিষ বা বিষ জাতীয় কিছু খাওয়ানো হইয়াছে বলিয়া জানায় এবং চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
কিছুদিন পর অবস্থার অবনতি হলে ২৯/১২/২০২০ তারিখ বেলা দেরটা দিকে রুমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমি, আমার বোন মিনা আক্তার (৫২) ভাইপো বাবলুসহ আমার মেয়েকে এম্বুলেন্স যোগে নিজ বাড়ী হইতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হইয়া নারায়নগঞ্জ ৩০০ ফিট রোডে পৌঁছালে আমার মেয়ে রোমা আক্তার মৃত্যু বরন করেন।
৩০ ডিসেম্বর ২০২০ সালের রুমা আক্তারের মা বাদী হয়ে মামলা করেন।মামলা নং ৩৩
কিশোরগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জয়নাল আবেদীন মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ৩১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।