Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the insert-headers-and-footers domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/pratidinsangbad2/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
দুঃখের স্রোত-সুলেখা আক্তার শান্তা – Pratidin Sangbad

দুঃখের স্রোত-সুলেখা আক্তার শান্তা

কতকাল তুই এভাবে অন্যের উপর হয়ে থাকবি। আর কতকালই বা বোকা হয়ে থাকবি? তোর জমি জমা তোর চাচায়
খায় বিনিময়ে তোরে কয়টা ভাত দেয়। তাও তুই আজাইর খাস না কাজ কইরা খাস। সুমন ভাবলেশহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে
ছিল। এত কথা কই তোর মুখ থেকে কথা বাইর হয় না কেন? কী বলবো চাচা? আমার আপন চাচা সে তো আমারে নিয়ে
কিছু ভাবে না। চাচা আপনি পর হয়েও যে আমারে নিয়ে ভাবেন, এমন ভাবনা তো আমার চাচাও ভাবেনা। আমির বলেন,
তোর মুখ দেখলে বড় মায়া লাগে। আর তুই যেভাবে পড়ে আছিস এটা কোন জীবন হইলো? তোর চাচা যে কাজ কাম করে
এ সহ্য হয় না। শোন তুই তোর জমির ভাগ চাইয়া নে। সুমন তাড়াতাড়ি বলে, না চাচা আমি পারবো না, আমার এত
সাহস নাই। তয় থাক পইরা এইভাবে চাচার কাঁধের উপর। সুমন ক্ষীণ কন্ঠে আমিরকে বলেন, চাচা রাগ কইরেন না
জানেন তো হামিদ চাচা কেমন। সে যেভাবে ধমক দিয়ে কথা বলে তাতে আর কোন কথা বলতে পারি না। ওই ধমকে
আমার বুক ধরফর করে। তোর দ্বারা কিচ্ছু হবে না আমি হামিদের সঙ্গে তোর ব্যাপার নিয়ে কথা বলব। বয়স্ক আমির
শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি। তিনি হামিদের সঙ্গে কথা বলেন, শোন তুই সুমনের চাচা, ওর সঙ্গে তোর রক্তের সম্পর্ক ফেলাই দিতে
তো পারবি না। হামিদ মুখ কালো করে বলে, আপনি বড় ভাই এত ভঙ্গি না করে কী বলবেন বলেন। আমির হামিদের
কথায় মনক্ষুন্ন হলেও প্রকাশ করে না। সুমন এতিম, ওর চার কূলে কেউ নাই তুই ছাড়া। ওর জমি জমাও তো কম না সব
তো তুই খাস। আমি বলি কী এইবার ছেলেটার হিস্যা ভাগ বাটোয়ারা কইরা ওরে বুঝাই দে। আপনি বড় ভাই, ভাই হইয়া
ভাইয়ের টান না টাইনা ভাবেন কিনা ওই সুমনের ভাবনা। আমার ভাইয়ের ছেলেরে নিয়া আমারে ভাবতে দেন, এটা অন্য
কেউ না ভাবলেও হইব। আমির বলেন, সুমন কী পর? খুব তো বড় বড় কথা বলতে পারিস! ভাইয়ের ছেলেটাকে না
করাস বিয়া, না দিস ওর জমি জমার ভাগ। আর ছেলেটারে তো রাখছোস ভয় ভীতি দেখাইয়া মেনি বিড়াল কইরা!
ছেলেটার জন্যে মায়া লাগে। আর দুই চার জন ছেলে তো আছে গ্রামে, তারা কেমন আর সুমনই বা কেমন। তোরে ভালো
জানি তুই একটা অন্যায় কর এটা আমি চাইনা। হামিদ খুব রেগে বলে, ভাই, ভাই করেন আপনি কি আমার বাপের ঘরে
জন্ম নিছেন! কারো বুদ্ধি আমার দরকার নেই। এমন কথা শুইনা আমির কোনো কথা না বাড়িয়ে গামছা ঘাড়ের উপর
দিয়া সে চইলা যায় নিজের ঘরে। সুমন দৌড় সে আমিরের কাছে যায়। চাচা আজ আপনি আমার জন্য এতগুলি কথা
শুনছেন। আমিতো জানি আমার চাচার মুখ ভালো না। ভালো কথা বলতে গেলেও ঝামটা মেরে কথা বলা তার স্বভাব।
আমির মনঃক্ষুণ্ন হলেও বলেন, যার যেমন কর্মফল তাকে তেমনি ভোগ করতেই হবে, আজ না হয় কাল। আমি পারিনা
তোরে কোন কিছু দিয়ে সাহায্য করতে। এক কাজ করি শোন, তোরে বিয়া করাইয়া দেই। সে তোর সুখ দুঃখের সাথী
হইবো। তোর জন্য যে মাইয়া দেখমু এইটা তুই তোর চাচারে বলিস না। তাইলে সেখানে যাইয়া তোর নামে বদনাম
করবো। সুমন বলে, চাচা বিয়ে কী গোপন কাজ? এটা তো তারা জানবেই। তাগো না জানাইয়া কিছু করলে পরে জানলে না
জানি কী ভয়াবহ কান্ড করে বসে! আরে বাবা জানালে কি তোরে বিয়ে করতে দিব? তারা তোর বিয়া নিয়ে কিছু ভাবে?
চুপচাপে মেয়ে দেইখা বিয়ের সব ঠিক হইয়া গেলে পরে জানাইস। দেখস না তোর পক্ষে কথা বলি দেইখা আমার উপর কী
রাগ। তার রাগে আমার কিছু আইবো যাইবো না। কেউর জন্য কোন ভালা কাজ করতে গেলে অন্যদের তা ভালো লাগবো
না এটা তো জানা কথা!
হামিদ বউয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে। সুমনরে চোখে চোখে রাখবা। কারো কাছে যাইতে দিবানা। কখন কে কী পরামর্শ দেয়
ঠিক নাই। এমনও হতে পারে ওর ভাগের সম্পত্তি চাইয়া বসতে পারে মানুষের পরামর্শে। তাতে ওর ভাগের সব জমিজমা
আমাদের হাতছাড়া হইয়া যাইবো। মানুষরে কত আর দাবাইয়া রাখা যায়। এতদিন যা করছি গায়ের জোরে করছি,
গায়ের জোরে সব কিছু করা যায় না। জোলি স্বামীর কথায় উৎসাহিত হয়ে বলে, আমিও তো কম করি না। সুমনের ভাত
যদি লাগে দুই প্লেট আমি দেই এক প্লেট। তাই খাইয়া উঠে পড়ে। এত বড় ছেলে কখনো মুখের উপর একটা কথা বলতে
সাহস পায় না। ওরে বিয়া শাদিও করবো না। বউ আইসা তার স্বামীর ভাগের অংশ বুঝে নিতে চাইবো।
সুমন বিয়ে করে বউ নিয়ে বাড়ি ওঠে। বউ দেখে হামিদ আর জোলি আশ্চর্য হয়! তুই বিয়ে করছস আমাগো না জানাইয়া!
তোরে আর তোর বউরে জায়গা দেয় কে দেখি। নতুন বউকে বরণ না করে চেঁচামেচি করে পুরাবাড়ি মাথায় তুলে নেয়।

তোরে এত সাহস দিছে কে। নিজের চাচারে কোন কিছুর না জানাইয়া বিয়া কইরা বউ নিয়া বাড়িতে উঠেছিস। চলতে
থাকে আরো তর্জন গর্জন। পারভিন নতুন বউ সে কী বলবে চুপ করে থাকে। ভাবছে আসতে না আসতে ঝড় তুফানের
আলামত, সহজে থামবে বলে মনে হয় না। না জানি সামনে আরো কিসের আলামত অপেক্ষা করছে। খবর পেয়ে সবাই
ভিড় জমায় নতুন বউ দেখতে। লোকজন হামিদ আর জোলিকে বলে, নেও চেঁচামেচি বাদ দিয়ে নতুন বউ ঘরে তোল।
কারো উপদেশ লাগবো না, ভালো মন্দ আমরাই বুঝবো। অগত্যা জোলি বউ ঘরে তুলে নেয়।
পারভিনকে নতুন অবস্থাতেই সাংসারিক কাজে লাগানো হয়। সেও মন দিয়ে কাজ কর্ম করে যাতে শ্বশুর-শাশুড়ির মন
পাওয়া যায়। নিজের আপন শ্বশুর শাশুড়ি নাই তা বলে পারভিন এদের কখনো পর দৃষ্টিতে দেখে না। সে মুখ বুজে সংসার
করতে থাকে। পারভিন সন্তান সম্ভাবনা। তখনও তার নিস্তার নাই। তাকে দিয়া প্রচুর কাজ করানো হয়। আপন করে
নেওয়ার শত চেষ্টার পরেও জোলি কখনো পারভিনকে সুদৃষ্টিতে দেখেনা। খাওয়া দাওয়া সব কিছুতেই বৈষম্য করে।
পারভিনের জানে আর কুলায় না। সে পরিত্রাণের পথ খুঁজতে থাকে। চিন্তা করে দেখে স্বামীকে নিয়ে আলাদা হলে এর চেয়ে
ভালো থাকবে। পারভিন আলাদা হওয়ার কথা স্বামীকে বলে। আমরা তোমার চাচা চাচি সঙ্গে না থেকে আলাদা থাকতে
পারিনা। পেটে বাচ্চা নিয়ে আমি আর পারিনা। সুমনের ভালো মানুষী স্বভাব। বউয়ের কথা শুনে মনে মনে ভয়ে আতঙ্কিত
হয়। না, না এ কথা বলোনা, চাচা, চাচি যতদিন আছে ততদিন তাদের সঙ্গে খাব তাদের সঙ্গেই থাকব। বউ কে পরিস্থিতি
বোঝাতে চেষ্টা করে। আমি আর পারিনা এই জ্বালা পোহাইতে। সুমন ক্ষীন কন্ঠে বলে, চাচা, চাচি কি দিব আমাদের আলাদা
হতে? তারা দেক আর না দেক তুমি আলাদা হইতে চাইবা। সুমন চাচার কাছে আলাদা হওয়ার কথাটা বলি, বলি করেও
বলতে পারে না। সাহস সঞ্চয় করে চাচার সামনে গেলেই সব যেন এলোমেলো হয়ে যায়।

সুমনের ছেলে হয়। ছেলে মায়ের বুকের দুধ পায় না। ছেলেকে আলাদা দুধ রোজ করে খাওয়াতে হয়। দুধের টাকা দেয় না
হামিদ আর জোলি। বলে, এত টাকা পাবো কই? আর তোমাদের খাওয়া পাড়ায় কি কম লাগে? তার একটা খরচ আছে না!
পারভিন এতকাল এই অনাসৃষ্টির বিরুদ্ধে কোন কথা বলেনি। বাচ্চার দুধের ব্যাপারে শ্বশুর, শাশুড়ির কথায় আঘাত পায়
সে। এ বাড়িতে আসা থেকে এই পর্যন্ত চুপ থেকেছে, এখন আর না। আমাদের সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে আলাদা করে দেন।
জোলি বলে, তোমার স্বামীরে কী দেবো তার কি কিছু আছে? তার ভাগের জমি জমা দেন। আমার স্বামী সংসারের জন্য
রাত দিন খাটে তারপরও সে আপনাদের কাছে ভালো না। সুমন আর পারভিন আলাদা হয়। কিন্তু তাদের জমি খেত কোন
কিছু দেয় না এমনকি হাঁড়ি পাতিলও দেয় না। বাড়ির এক কোণে একটু জায়গা দেয় ঘর তোলার জন্য, তাতে ছোট্ট একটা
ঘর তুলে তারা থাকে। সুমনের ছোট ঘর হলেও শান্তি, আনন্দের কম নাই। সে এতদিন পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে।
সুমনের ছেলে ছোট্ট রবিনের স্কুলে যাওয়ার বয়স হয়েছে। সেই স্কুলে যায়। সুমন তার চাচার কাছে জমির ভাগ চায়।
হামিদ খুব কৌশলী লোক সে বলে, আমিও ভাবছি তোর ভাগের জমি তোকে বুঝাই দেওয়া উচিত। গ্রামের পাঁচজন না
ডাইকা তোরে আমি কাগজ-কলমে তোর অংশ তোরে বুঝায় দেব। তোরে নিয়ে রেস্ট্রি অফিসে যাব। তোর ভাগের অংশ
তোর নামে কাগজ কলমে লিখিত করে তোকে বুঝাইয়া দিবো। কাল তুই রেডি থাকিস তোরে নিয়া রেজিস্ট্রি অফিসে যাব।
সুমন খুবই খুশি চাচার কথায়। সে চাচার সঙ্গে যায় জমি ভাগটা বুঝে নেওয়ার জন্য। যাওয়ার পথে একটু নিরিবিলি
জায়গায় এসে হামিদ বলে, তুই এখানে থাক, আমি একটু কাজ সাইরা আসি। সুমন অপেক্ষা করতে থাকে। হঠাৎ কয়েকজন
লোক এসে সুমনকে বেদম পেটাতে থাকে। মেরে সুমনের দুই পা চিরতরে পঙ্গু করে দেয়। সেখানে সুমন পড়ে থাকে।
কিছুক্ষণ পর লোকজন এগিয়ে আসে। তাকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভিন স্বামীর এমন দুর্ঘটনার কথা
শুনে হাসপাতালে ছুটে যায়। সুমনকে দেখে আহাজারি করতে থাকে, আমার এই সর্বনাশ করল কে! পারভিন তার চাচা
শ্বশুরকে সরাসরি বলে, আপনি আমার স্বামীর এই অবস্থা করেছেন। আমি কেন করব? কোথায় সুমন চুরি ছাঁচড়ামি
করতে গেছে তারা কে কী কইরা দিছে তা আমি কী করবো! আপনি তো আমার স্বামীকে নিয়ে গেছেন জমির ভাগ বুঝিয়ে
দিবেন বলে। সেখানেই তো আমার স্বামীর এই অবস্থা হলো। হামিদ কৌশলী প্রতিবাদ করে। না আমি সুমনরে নিয়ে
কোথাও যাইনি! তুমি এসব কী বলছ? পারভিন প্রতিবাদ করে, এত বড় মিথ্যা কথা! আপনি আমার স্বামীরে নিয়ে বের
হয়েছেন তারপর এইভাবে অস্বীকার করছেন। আল্লাহ সহ্য করবে না।
পারভিন অসুস্থ স্বামী নিয়ে পড়ে থাকে। স্বামীর চিকিৎসা চলে না, সংসার চলে না। পারভিনের বোন ময়না ঢাকায় থাকে।
সে বোন জামাইকে দেখতে এসেছে। বোন আর বোন জামাইর বেহাল অবস্থা দেখে কষ্ট পায়। ময়না বলে, তোদের আয়

রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে এখন সংসার চালাবি কী কইরা? আমারও তো অবস্থা ভালো না। তোরে যে কিছু দিয়া সাহায্য
করব সেই অবস্থা নাই। ‌একটা কাজ করতে পারিস তোর রবিনরে আমার কাছে দিতে পারোস। পারভিন গালে হাত দিয়ে
চিন্তিত মনে বোনের কথা শুনছিল। তোর পোলাডা তো ডাঙ্গর হইছে। ওরে একটা কাজকর্মে লাগান যায়। ঢাকায় রোডে
হকারি করে ওর বয়সী অনেক ছেলে। সেখানে বিভিন্ন জন বিভিন্ন কিছু বিক্রি করে। তাতে ভালোই ইনকাম হয়। তোর
ছেলে পানি বিক্রি করলে ভালো আয় করতে পারবে। কি বলেন আপা, আমার এইটুকু রবিন পানি বেচবো। পারভি করুন
কন্ঠে বলে। হ্যাঁ বোতলের পানি মানুষের কাছে দিবে। যার লাগবো সে নিব, পানির বিনিময়ে টাকা দিব। ও ছোট বাচ্চা
দেখতেও বেশ ভালো ওর বিক্রিও ভালো হইবো। আমি তোর সংসারে এই হাল দেইখা বললাম। শয্যাসায়ী সুমন নিঃশব্দে
কথাগুলো শুনছিল। সে বলে উঠলো, আমার ছেলেকে এমন কাজে দেওয়ার দরকার নেই। ময়না একটু ঝামটা মেরেই বলে,
তুমি তো বিছনায় পড়ে আছো। তুমি কী করে বুঝবা সংসার কী করে চলবে। পারভিন বুকের ব্যথা বুকে চাপা দিয়ে‌
ছেলেকে বোনের সঙ্গে পাঠায়। রবিন ঢাকায় এসে কাজে লেগে যায়। মোটামুটি বুদ্ধি আক্কেল থাকায় তার পক্ষে বাধা
অতিক্রম সহজ হয়। উপার্জন ভালই হতে থাকে। টাকা বাড়িতে পাঠায়। সুন্দর চেহার রবিন রাস্তায় থাকতে থাকতে কালো
হয়ে যায়। একদিন সে মাকে ফোনে বলে, মা আমি বাড়ি আসব। পারভিন আকুলতা নিয়ে বলে, বাবা তুই বাড়ি আয়।
রবিন হাতে টাকা ছিল তা আগেই বাড়ি পাঠায় দিছে। বাড়ি যাওয়ার জন্য খরচ জোগাড় করে তারপর তাকে বাড়ি যেতে
হবে। বাড়ি যাওয়ার জন্য রবিন উথালা হয়ে আছে। মায়ের মুখ দেখবে, বাবার মুখ দেখবে। ছোট্ট রবিন খুব উদ্বিগ্ন হয়ে
আছে! মাথার চুলগুলো উস্কো খুসকো। রাস্তায় চলছে অন্যমনস্ক হয়ে। হঠাৎ নজর পড়ে রাস্তার ওপারে একটি গাড়ির কাঁচ
নামিয়ে তাকে ইশারায় ডাকছে। রবিন তাড়াতাড়ি রাস্তা পার হয়ে গাড়িটার দিকে এগিয়ে যায়। হঠাৎ সেই মুহূর্তে ঘটে
দুর্ঘটনা। দ্রুতগতির একটা গাড়ি ধাক্কায় ছিটকে পড়ে রবিন। পানির বোতলগুলো ছড়িয়ে পড়ে রাস্তায়। রবিন সেখানেই
শেষ।
পারভিন অস্থির হয়ে পড়ে আমার এমন লাগছে কেন! আমার কিছুই ভালো লাগছে না। ছেলের কচি মুখটা চোখের সামনে
ভেসে ওঠে অন্তর দগ্ধ হতে থাকে। মায়ের মন বলে কথা। সন্তানের অমঙ্গলের আলামত যেন দোলা দেয় মনে। সে বাড়ি
থেকে বের হবে ঢাকার উদ্দেশ্যে। ঠিক তখনই রবিনের লাশবাহী গাড়ি পৌঁছে বাড়িতে। ছেলের ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখে
পারভিন বাবারে বলে গগনভেদী এক চিৎকার দেয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। প্রতিবেশীরা এক সঙ্গে দুটি লাশ দাফনের
প্রস্তুতি নেয়। জীবন সংগ্রাম আর সুখের স্বপ্ন অনেকের কাছে এভাবে একাকার হয়ে যায়।