নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জে ইটনায় যৌতুকের দায়ে স্ত্রী হত্যার চঞ্চল্যকর মামলার স্বামী সোহেল মিয়া (২১) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২১সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার জয়সিদ্ধী গ্রামের আলাল মিয়ার ছেলে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এম এ আফজাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০২০ সালের শেষ দিকে সোহেল মিয়ার সাথে সাবিনা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সোহেল মিয়াকে সাবিনার পিতা ইদ্রিছ মিয়া দুই লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কারসহ আসবাবপত্র প্রদান করেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য সাবিনাকে স্বামী সোহেল ও শাশুড়ি ফুলবানু মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করে।নতুন করে ৫০হাজার দাবি করে কিন্তু সাবিনা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ২০২১ সালের ১৯শে এপ্রিল স্বামী সোহেল মিয়া ও শাশুড়ি ফুলবানু যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন শুরু করে। ওইদিন এলাকাবাসী তাকে রক্ষা করেন। ঢাকায় কাজের জন্য অবস্থান করা ইদ্রিছ মিয়া খবর পেয়ে বাড়িতে গিয়ে মেয়ে সাবিনাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর ২০২১ সালের ২২শে এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ইদ্রিছ মিয়া মেয়েকে বাড়িতে রেখে চা খাওয়ার জন্য বাড়ির পাশে বাজারে যান। বাজার থেকে ফিরে এসে সাবিনাকে ঘরে না পেয়ে ইদ্রিছ মিয়া খোঁজাখুজি শুরু করেন। পরে খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে মুদিরগাঁও ঈদগাহ মাঠে গিয়ে মেয়ে সাবিনার লাশ দেখতে পান। এ সময় নিহত সাবিনা আক্তারের লাশের পাশে স্বামী সোহেল মিয়া ও শাশুড়ি ফুলবানু ছিলো। স্থানীয়রা তাদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা যৌতুকের টাকার জন্য সাবিনার ওড়না তার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে। এ ঘটনায় নিহত সাবিনা আক্তারের পিতা ইদ্রিছ মিয়া স্বামী সোহেল মিয়া, শাশুড়ি ফুলবানু ও অজ্ঞাত ২/৩ জনকে আসামি করে পরদিন ২৩শে এপ্রিল ইটনা থানায় মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর পর স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে সোহেল মিয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আহসান হাবিব মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ২৪ শে আগষ্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।