আজ ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে র‍্যাগিং ও মারধরের ঘটনা ভিত্তিহীন

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:কিশোরগঞ্জের শহীদ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ ইকরামকে মারধরের ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন অভিযুক্তরা।

আজ ১লা মে বিকালে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে
সংবাদ সম্মেলন করেন।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হৃদয় কান্তি বিশ্বাস তীর্থ, ফরসাল,সৌরভ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
তারা বলেন,অভিযুক্ত ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপবাদ ও অপপ্রচারের ঘটনাটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমুলক ও ভীত্তিহীন। যার প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষন এবং হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ভর্তিকৃত কাগজপত্র।

তারা বলছেন, ফয়সাল আহমেদ ইকরামের দাবি তাকে ২৪ এপ্রিল ভোরে একই মেডিকেলের কিছু শিক্ষার্থী তার রুমে প্রবেশ করেন এবং তাকে মারধর করার কারণে তার ডান হাতের শোল্ডার ডিজলোকেশন হয়। পরে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়। যার কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। এই ঘটনা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক। সেদিন এপ্রিল সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সেদিন ৬টা ১১ মিনিটে তার রুম ৩০১ থেকে বেরিয়ে সিড়ি দিয়ে উপড়ে উঠে যায়। এসময় তার চলাচলে কোন ধরনের জখম বা আঘাত, শোল্ডার ডিজলোকেশন বা অসঙ্গতি দেখা যায়নি এবং সে ডান হাতেই ফোনে কথা বলছিলো। সেইসঙ্গে ৮ টা ৩২ মিনিটের এর ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাকে স্বাভাবিকভাবে হাঁটা-চলা করতে দেখা যায়।

তারা বলেন,ফয়সাল আহমেদ ইকরামের দাবি তাকে মেরে শোল্ডার ডিজলোকেশন করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঐদিনের ৯টা ৯ মিনিটে ফয়সাল ক্লাস করার জন্য কাধে ব্যাগ নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় ক্লাসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। যা সিসিটিভিতে স্পষ্ট এবং সে ৯ টা ৩০ এ ক্লাসেও অংশগ্রহণ করে।

তারা আরও বলছেন, ফয়সাল আহমেদ ইকরাম ঘটনা আরো বড় করার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের ফাইল ও মেডিসিন বিভাগের ভর্তিকৃত চিকিৎসা নথিপত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়। ভর্তির সময় ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার তার গায়ে কোন ধরনের মারামারির চিহ্ন খোজে পায়নি। এমনকি মেডিসিন বিভাগের ভর্তি হবার পর মেডিসিন বিভাগের ডাক্তারদের পরীক্ষা মাধ্যমে কোন আঘাত বা জখম বা শোল্ডার ডিজলোকেশনের চিহ্ন পাওয়া যায় নি। ভর্তিকৃত চিকিৎসা নথিপত্রে স্পষ্ট এ তথ্যও উল্লেখ আছে, তার মাসকুলোস্ক্যালিটাল এক্সামিনেশনের প্রতিবেদন একদম নরমাল। এসব কিছুর লিগাল ডুকোমেন্ট আছে, যা সংযুক্ত করা হলো। ফয়সাল আহমেদ ইকরাম তার সাজানো নাটকে নিজের ফায়দা হাসিলের জন্য সামান্য ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করার জন্য তার টার্গেটকৃত একদল শিক্ষার্থীদের অভিযুক্ত করে।

ভুক্তভোগী গত বৃহস্পতিবার কলেজের অধ্যক্ষ, হাসপাতালের পরিচালক, ছাত্রাবাসের সুপার ও অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ফয়সাল আহমেদ ইকরাম জিকোরীর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ইকরাম বলেন, ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় চতুর্থ বর্ষের সিনিয়র ভাইয়েরা আমাকে ক্যাম্পাসে মাঠে ডেকে নিয়ে যায়। আমার মাঠে যেতে একটু দেরি হয়ে যায়। পরে ফয়সাল ভাই আমাকে বলে “সোজা হয়ে দাঁড়া, তোর পা সোজা কর, হাত পেছনে নে। একপর্যায়ে ফয়সাল ভাই আমার মা তুলে গালি দেন। আমি তখন বলি ভাই ভদ্রতা বজায় রাখেন। আমি এই র‍্যাগিংয়ের প্রতিবাদ করায় ঘুমের মধ্যে
চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ফয়সাল, স্বনন, তীর্থ, জয়, শাফীন, তাহের ও লিমনসহ ১৫-২০জন মিলে আমাকে আঘাত করে।
ফয়সাল আহমেদ ইকরাম বর্তমানে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ আশুতোষ সাহা রায় বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সহযোগী অধ্যাপক আবুল কেনানকে সভাপতি করে নয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ