insert-headers-and-footers
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/pratidinsangbad2/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
বার্ধক্যে একাকীত্বের যন্ত্রণা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বোঝেনা। জীর্ণ অস্তিত্বের ছাপ শরীরে পড়লেও
মনটাকে জরাজীর্ণ করে না। একটা অবলম্বন তখন জীবনকে প্রাণবন্ত করে তোলে। ছোট্ট মেয়ে মায়া আজিজার বার্ধক্যের একাকীত্ব পূরণ করছে। সাইফুল আর মর্জিনা স্বামী স্ত্রী। দুজনই কর্মজীবী। তাদের ছোট মেয়ে মায়াকে রেখে যায় দাদি আজিজার কাছে। সারাদিন কাজ করে ফেরার পর দুইজনেই ক্লান্ত থাকে।
মর্জিনা বাসায় এসে আবার রান্নাবান্না করে। মেয়েকে কাছে পায় না। কাজের ফাঁকে সারাক্ষণ মনে পড়ে মেয়ের কথা। বাসায় এসে মেয়েকে কী করবে, বুকে রাখবে না মাথায় রাখবে বুঝে উঠতে পারে না। সোনামনি জাদুমনি বলে আদরে ভরিয়ে তুলতে চায়। আজিজা পুত্রবধূকে বলেন, বৌমা তুমি এবার কাজ ছেড়ে দাও। এইটুকু বাচ্চা মায়ের আদর ভালোবাসা পায় না। ছোট বাচ্চা বলতে পারে না। মায়ের জন্য কলিজা থাকে সুখাইয়া। মর্জিনা বলে, মা কাজ যা করতেছি বাচ্চাটার ভবিষ্যতের দিকে তাকাইয়া।
মায়া যখন একটু বুঝতে শিখব তখন বাচ্চাকে নিয়েই থাকবো। এখন আপনি আছেন নাতির দেখাশোনা করতে পারেন। মর্জিনা রান্নাবান্না সেরে রাতে সবাই একসঙ্গে খায়। খাওয়া-দাওয়ার পরে মর্জিনা স্বামী কে বলে, তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ো সকালে উঠে কাজে যেতে হবে। ঘুমের প্রস্তুতি নেয় এমন সময় কেউ দরজায় নক করে। সাইফুল দরজা খুলে দেখে একটা বৃদ্ধ মহিলা। বৃদ্ধ মহিলা বলে, বাবা আমি বয়স্ক মানুষ আমাকে রাতে একটু শুইতে জায়গা দিবা? সকালে উঠে আমি চলে যাব। সাইফুল দ্বিধায় পড়ে। একজন মহিলা তাকে চেনে না জানে না কি করে তাকে জায়গা দেয়। আমাদের বাসায় তেমন জায়গা নেই আপনাকে যে রাখবো। বাবা আমি বুড়া মানুষ একটু কোনরকম জায়গা দিলেই রাতটা পার কইরা ভোরে চলে যাব। মর্জিনা দরজার কাছে এগিয়ে এসে বলে, এত করে যখন বলছে দেও না রাত্রে জায়গা। অগত্যা সাইফুল বলে, ঠিক আছে আসেন।
রাতে খাবার দিল বৃদ্ধ আলেয়া খেয়ে বলে, আমি মনটা খুলে দোয়া করি তোমরা সুখী হও। আজিজার কাছেই শয়নের ব্যবস্থা হয়। একটা শব্দ পেয়ে মধ্য রাতে সাইফুল ঘুম ভেঙ্গে যায়। উঠে দেখে বৃদ্ধা আলেয়া দাঁড়িয়ে আছে। আপনি ঘুমান নাই। বাবা আমি একটু পানি খাব। সাইফুল গ্লাসে করে পানি দেয়। মেয়ে মায়াকে আদর করে সাইফুল ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে মেয়ে মায়া আর বৃদ্ধ আলেয়া নাই। বাসায় কান্নাকাটির রোল পড়ে যায়। হায় হায় একি সর্বনাশ হলো!
যাকে দয়া দেখাতে গিয়ে আশ্রয় দেওয়া হলো, সেই বুড়ো মহিলা কী সর্বনাশ করল! ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করে মায়ার সন্ধান পাওয়া গেল না, বুড়ো আলেয়ও লা পাত্তা। বাবা মার বুকে এখন হাহাকার আর হাহাকার।