আজ ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কিশোরগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ৪ আহত শতাধিক 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা এক দফা দাবিতে কিশোরগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে এক নারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন বলে হাসপাতালে সূত্রে জানা গেছে। সহিংসতায় শিক্ষার্থী, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অন্তত দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। 

নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের বীরদামপাড়া গ্রামের আলম মিয়ার স্ত্রী অঞ্জনা বেগম (৩৫), কর্শাকড়িয়াল ইউনিয়নের কড়িয়াল গ্রামের দেলওয়ার হোসেনের ছেলে ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মবিন (৩৫) এবং তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা ইউনিয়নের চর তালজাঙ্গা গ্রামের আজহারুল ইসলামের ছেলে রুবেল আব্দুল্লাহ (৩২)। নিহত অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি।

রবিবার (৪ আগস্ট) সকাল থেকেই আন্দোলনকারীরা শহরের পুরানথানা মোড়ে জমায়েত হতে থাকেন। অন্যদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ অফিস এলাকায় জড়ো হতে থাকেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে তারা পুরানথানা অভিমুখে রওনা দেন। আর আন্দোলনকারীরা পুরানথানা এলাকা থেকে গৌরাঙ্গবাজার মোড় অভিমুখে রওনা হন।

পরে গৌরাঙ্গবাজার এলাকায় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আন্দোলনকারীরা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায়। এতে দুইজন দ্বগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। ভবনে থাকে দুটি প্রাইভেট কার ও ৯টি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। এ ছাড়া বিক্ষোভে অন্তত ২০টি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছুড়ে। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক) আকরাম উল্লাহ জানান, দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া দুইজনের লাশ হাসপাতালে রয়েছে। তাদের মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজন পুরুষ (৫০) ও আরেকজন মহিলা (৩৫)। মহিলার নাম অঞ্জনা বেগম। এ ছাড়া পুরুষের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও জানান, ২৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ও ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য দুইজনকে অন্যত্র রেফার্ড করা হয়েছে।

অন্যদিকে বিকেল ৫টায় জেলার শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন জানান, হাসপাতালে নিহত একজনের লাশ রয়েছে। তার নাম মবিন। এখানে মোট ৬৫ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তাদের মধ্যে ১৬ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ