insert-headers-and-footers
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/pratidinsangbad2/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:‘মে ফ্লাওয়ার’ নাম হলেও সে বিস্ময় নিয়ে যুব সংগঠক আমিনুল হক সাদীর পাঠাগারের আঙ্গিনায় ফুটেছে। মে মাসের একদিন আগেই আজ বুধবার প্রস্ফুটিত হয়েছে মে ফ্লাওয়ার। এতে করে পাঠাগারে পড়তে আসা নারী পুরুষ ও যুব পাঠকরাও মুগ্ধ।সেই সাথে ফুল ও বইপ্রেমী আমিনুল হক সাদীও উচ্ছ্বসিত ।
কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের মহিনন্দ ইউনিয়নের গোয়ালাপাড়ায় অবস্থিত মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগার ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যুব উন্নয়ন পরিষদের আঙ্গিনায় (৩০ এপ্রিল) বুধবার সকালে হঠাৎ ফুলটি জানান দিলো তার অস্তিত্ব ও সৌন্দর্য্য। প্রকৃতিগত কারণেই হয়তো পিছিয়ে যায় ফুলদের ফোটার পালা। একটি গাছে নির্দিষ্ট সময়ে ফুল ফোটার কথা থাকলেও সে ফুলটি আর যথাসময়ে ফোটে না। আগেভাগেই এই বিষয়টি উপলব্ধি করে ফুলপ্রেমীরা অবাক হয়ে পড়েন!
ফুল প্রেমী সাবেক সেনা সদস্য লায়ন এসএম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত ২০২৩ সালের ২৭ মে যুব সংগঠক ও যুব পাঠাগারের উদ্যোক্তা বৃক্ষপ্রেমী আমিনুল হক সাদী ভাইয়ের প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারে গিয়ে মে ফ্লাওয়ারের কয়েকটি বীজ উপহার দেই এবং নিজ হাতে রোপন করি। সাদী ভাই ফোন করে জানালো আপনার দেওয়া বীজে মে ফ্লাওয়ারে ফুল ফুটেছে। আমি এ কথাটি শুনে আশ্চর্য হয়ে যাই মাত্র কদিনেই জায়গা বদল করে চারাটি রোপন করায় ফুলটা ছোট ও দুর্বল হয়ে ফুটে। মে মাসে ফুটার কথা থাকলেও প্রথমদিকে বিলম্বে জুনে ফুটেছিল। পরবর্তীতে ২০২৪ সালে তা যথাসময়ে ফুটলেও সেটি কে বা কারা চুরি করে নিয়েছিল। কিন্ত আশ্চর্য হলাম সেই চুরে যাওয়া গাছের একটি বীজ মাটির নীচে ছিলো তা থেকে এবারে মে মাসের আগের দিনেই ফুটেছে মে ফ্লাওয়ার ।
মহিনন্দের শৌখিন বই ও ফুলপ্রেমী যুব সংগঠক আমিনুল হক সাদী বলেন, ‘এবারই দেখলাম মে মাস আসার আগেই মে ফ্লাওয়ার ফুটলো। যদিও তা বছরে একবার ফুটে। আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম জাহাঙ্গীর ভাইয়ের দেওয়া মে ফ্লাওয়ারের গাছ যেহেতু চোরে নিয়েগেছে তাই আর ফুটবে না। কিন্ত না এর বীজ মাটির নীচে লুকিয়ে থাকায় এই গাছটি কন্দ থেকে হয় বলে মাটির গর্ত দেখে চেনার উপায় নাই যে এটি মে ফ্লাওয়ারের গাছ। তাই মনে হলো- শখের ফুলের এই বীজটি হারিয়ে যায়নি। আজ বুধবার সকালে দেখি উঁকি দিল সে! বিকেলে দেখলাম একটু একটু করে তার বেড়ে উঠা। সবশেষে লালবৃত্তময় সৌন্দর্য।’
ফুলটির শোভা প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, এই ফুলটি অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এবং দুর্লভ। ফুল গন্ধহীন। ফুটন্ত ফুল দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পাপড়ি ও পুংকেশর অসমান হলেও অপুর্ব। উজ্জ্বল লাল রঙের মাঝে হলুদ-সাদা আভার মিশ্রণে গোলাকার বল আকৃতির ফুল ফোটে। এ ফুলটি অনেকটা কদম ফুলের মতো। তবে আকারে আরও বড় হয়। এটি অল্প সময়ের ফলে ছোট হয়েছে। ফুলটি যে কারও মন জয় করতে পারে। প্রায় দুই-তিন সপ্তাহ ফুলটি স্থায়ী থাকবে।
ফুলপরবর্তী গাছ সম্পর্কে এই শৌখিন ফুলপ্রেমী জানান, ফুল ঝরে পড়ার পর পাতার সৌন্দর্য আরও কিছুদিন উপভোগ করা যায়। পাতাগুলো তখন আরও বেশি চকচকে হয়ে উঠে। ফুলের পরেই মাটির নিচ থেকে ৬ থেকে ৮টি বড় বড় পাতা বের হয়। প্রতিটি পাতার দৈর্ঘ্য ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থ ১২ থেকে ১৪ সেন্টিমিটার হয়। আরেকটি মজার ব্যাপার হলো- বছরে মাত্র একবার ফোটা এ বৃত্তাকার ফুলটিকে দর থেকে দেখতে কাঁটাযুক্ত মনে হয়। আসলে একটি কাটাও নেই। আপনি যদি ফুলের পাপড়িগুলোতে স্পর্শ করেন তখন আপনার মনের মাঝে নরম-কোমল অনুভ‚তি হবে। আপনার আঙুলের ডগায় উঠে আসবে হালকা হলুদ রং। এগুলো পুষ্পরেণু।
মহিনন্দ ভাটোয়াপাড়ার বাসিন্দা শিল্পী নিরব রিপন বলেন,আমাদের মহিনন্দ ইউনিয়নের কৃতি সন্তান শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক আমিনুল হক সাদী ভাইয়ের পাঠাগারের আংগিনায় মে ফ্লাওয়ার দেখে পুলকিত হলাম। সাদী ভাই যেখানেই যান সেখানেই আলোকিত করেন। নিজ এলাকার অবহেলিত গ্রামে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিশু ও বেকার যুবদের কল্যাণে সব সময় দেখি কিছু একটা করার চিন্তায় ব্যস্ত থাকেন। যা চিন্তা করেন আবার বাস্তবায়নও করে ফেলেন। সুবিধা বঞ্চিতদের নিয়ে গ্রামে যে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন তা সত্যি বিরল। আমরা এই কৃতী যুব সংগঠকের আরও উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করি। প্রকৃতিতেও যেনো এক অন্যরকম শোভা ছড়িয়ে দিলেন।
ফুল গবেষকরা জানিয়েছে মূলত সুদূর আফ্রিকাতে মে ফ্লাওয়ারের আদি নিবাস। এর বিস্তৃতি রয়েছে পূর্ব ভারত, মিয়ানমার ও ইন্দোনেশিয়াতে। আমাদের দেশের পরিবেশের সঙ্গে ফুলটি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে বেশ। ফুলপ্রেমীরা তাই বাগানে, বারান্দার টবে, ছাদ বাগানে মে ফ্লাওয়ারের গাছ লাগিয়ে এর বার্ষিক শোভা মাত্র একবার উপভোগ করার সুযোগ পান। বাগানের শোভা বৃদ্ধি করা মে ফ্লাওয়ার। ফুল শেষে গাছে ফল ধরে। ফল গোলাকার থেকে লম্বা। রং গাঢ়-ধূসর ও শক্ত। কন্দ ও বীজের মাধ্যমে এই ফুলের বংশবিস্তার ঘটে। ফুলের ডাটা ও গাছের গড় উচ্চতা প্রায় ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে