Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the insert-headers-and-footers domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/pratidinsangbad2/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
পাঁচ লাখ টাকার প্রকল্পের পুরোটাই ইউপি সদস্যের পকেটে – Pratidin Sangbad

পাঁচ লাখ টাকার প্রকল্পের পুরোটাই ইউপি সদস্যের পকেটে

নিজস্ব প্রতিবেদক:কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ডেন্ডু মিয়ার বিরুদ্ধে অভিনব কায়দায় প্রতারণার মাধ্যমে অতিদরিদ্র কর্মসৃজন কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে। কৃষি সহায়তার কথা বলে জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে কৌশলে মোবাইল সিম উত্তোলন ও নিজের কাছে রেখে ইউপি সদস্য ডেন্ডু মিয়া প্রকল্পের পুরো পাঁচ লাখ ১২ হাজার টাকার বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া উপকারভোগীর তালিকায় সচ্ছল কৃষকদের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সামাজিকভাবে তারা হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন। এ ব্যাপারে ৬নং ওয়ার্ডের আড়াইউড়া গ্রামের মো. বাচ্চু নামে একজন সচ্ছল কৃষক জেলা প্রশাসকের কাছে গত ১২ই জুন প্রতিকার চেয়ে অভিযোগও করেছেন।
এ অভিযোগের বিষয়ে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বুধবার উপকারভোগীর তালিকায় থাকা চারজন ভুক্তভোগী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তারা হলেন, আড়াইউড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হেকিমের ছেলে মো. বাচ্চু, তার স্ত্রী অজুফা, মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মো. দ্বীন ইসলাম ও মো. নূরুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. সমলা। দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের গৌরাঙ্গবাজার এলাকায় অনলাইন নিউজ পোর্টাল কিশোরগঞ্জ নিউজ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ইউপি সদস্য ডেন্ডু মিয়া কৃষি সহায়তা দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নেন। পরে এলাকার একটি মোবাইল ফোনের দোকানে নিয়ে গিয়ে মেশিনে তাদের ফিঙ্গার প্রিন্ট নেন। দীর্ঘদিন পরে তারা জানতে পারেন, এলাকায় মাটিকাটার একটি প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে তাদের নাম দিয়েছেন ইউপি সদস্য ডেন্ডু মিয়া। কৌশলে তাদের ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে মোবাইল সিম ও রকেট একাউন্ট খুলে ইউপি সদস্য ডেন্ডু মিয়া সেসব মোবাইল সিম তার কাছে রেখে দেন। পরে রকেট একাউন্টে আসা প্রকল্পের অর্থ উত্তোলন করে ইউপি সদস্য ডেন্ডু মিয়া উপকারভোগীদের তালিকায় থাকা নামের ব্যক্তিদের না দিয়ে পুরোটাই আত্মসাৎ করেন।
সম্প্রতি উপকারভোগীদের তালিকা প্রকাশিত হলে তারা বিষয়টি জানতে পারেন। সংবাদ সম্মেলনে মো. বাচ্চু জানান, তিনি একজন সচ্ছল কৃষক। তার ২০ কাঠা জমি রয়েছে। তার দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে ঢাকায় ব্যবসা করে এবং আরেক ছেলে ঢাকায় চাকরি করে। মাটিকাটার শ্রমিকের তালিকায় তার এবং তার স্ত্রী মোছা. অজুফার নাম থাকায় সামাজিকভাবে তারা হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন। তার মেয়ের জামাইও তাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করায় পারিবারিকভাবে এ দম্পতি বিব্রত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে তালজাঙ্গা ইউনিয়নের আড়াইউড়া আঞ্জু মিয়ার বাড়ি হতে আড়াইউড়া উত্তরপাড়া জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ও উন্নয়ন প্রকল্পে ৩২ জন শ্রমিকের অনুকূলে মোট পাঁচ লাখ ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ জন্যে প্রকল্প সভাপতি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ডেন্ডু মিয়া ৩২ জন শ্রমিকের মোবাইল নম্বরসহ একটি তালিকা তৈরি করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেন। এর আগে তালিকাভুক্ত উপকারভোগীর সবার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর থাকার পরও কৌশলে ইউপি সদস্য মো. ডেন্ডু মিয়া প্রত্যেকের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে নতুন করে তাদের নামে মোবাইল সিম তুলে ও রকেট একাউন্ট খুলে সেসব মোবাইল সিম তার সংগ্রহে রাখেন। পরে শ্রমিকদের মোবাইল নম্বরের অনুকূলে বরাদ্দের টাকা আসার পর সেসব উত্তোলন করে ইউপি সদস্য মো. ডেন্ডু মিয়া আত্মসাৎ করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. ডেন্ডু মিয়া বলেন, সবার সম্মতি নিয়েই তালিকায় নাম দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ সুন্দরভাবে শেষ করাও হয়েছে। তবে উপকারভোগীদের মোবাইল সিম তার কাছে থাকলেও টাকা উত্তোলনের পর বেশিরভাগ শ্রমিকই তাদের পাওনা বুঝে নিয়েছেন। তবে কয়েকজনের টাকা এখনও নেননি। মূলত জমি সংক্রান্ত একটি বিরোধের জের ধরে আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু মোতালেব জানান, অভিযোগের বিষয়টি তারা তদন্ত করে দেখছেন। তদন্তে কোন অনিয়ম পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।