Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the insert-headers-and-footers domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/pratidinsangbad2/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
ভুল সবই ভুল-সুলেখা আক্তার শান্তা – Pratidin Sangbad

ভুল সবই ভুল-সুলেখা আক্তার শান্তা

ডেস্ক:নাজমা একটা ফ্যাক্টরির সিফট ইনচার্জ। ফ্যাক্টরির নাইট শিফটের ডিউটি শেষ করে বাসায় ফিরছিল। রেললাইনের রাস্তাটা শর্টকাট। বড় রাস্তা দিয়ে গেলে বেশ খানিকটা ঘুরে যেতে হয়। রেল লাইন দিয়ে যাবে স্থির করে সে। মানুষের চলাচল কমে এসেছে, গা ছমছম করে। মনে সাহস সঞ্চয় করে এগিয়ে চলে। একটু দূরে রেল লাইনের উপরে একটা লোক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে। তখন ট্রেন আসার সময় হয়েছে। নাজমা লোকটার কাছাকাছি আসতে ট্রেনের হুইসেল শুনতে পায়। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে ট্রেন প্রায় এসে পড়েছে। লোকটা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে রেললাইনে। নাজমার কোন কিছু চিন্তার অবকাশ ছিল না। দৌড়ে এসে লোকটাকে ধাক্কা দিয়ে রেললাইনের পাশে ফেলে দেয়। অল্পের জন্য রক্ষা পায় নাজমা এবং লোকটা। ট্রেন পার হয়ে যায়। লোকটার কী হলো দেখতে এগিয়ে আসে নাজমা। দেখে গড়িয়ে রেললাইনের ঢালুতে একটা ঝোপের কাছে আটকে আছে। নাজমা সামলে উঠে এগিয়ে গিয়ে দেখে লোকটা জ্ঞান হারিয়েছে। চেহারা সুরত আকর্ষণীয়, নাজমার মায়া হলো। তার চেঁচামেচিতে আশেপাশে কয়েকজন লোক ছুটে এসেছিল। তাদের সাহায্যে লোকটাকে নাজমা বাসায় নিয়ে যায়। ততক্ষণে জ্ঞান ফিরেছে তার। কথা বলছে না এবং চোখ বন্ধ করে আছে। জ্ঞান যখন ফিরেছে তখন কথা বলবেই। নাজমা সাহসী মেয়ে সবকিছু ম্যানেজ করতে তাকে বেগ পেতে হবে না। খাওয়া দাওয়ার পর একটু স্থির হলে নাজমা আত্মঘাতী হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করে।
বলে, আমি আর সাদিক শিশুকাল থেকে বন্ধু। একেবারে হরিহর আত্মা। প্রাইমারি স্কুলে থেকে একসঙ্গে পড়ি। দুই বন্ধু একে অপরকে ছাড়া কিছুই বুঝি না। একে অপরকে ছাড়া কিছু করিও না। আমাদের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না। সাদিক অবস্থাপন্ন ঘরের সন্তান। এক প্রকার বলা যায় সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম। অভাব কি জিনিস তা সাদিক দেখে নি। প্রয়োজনের জিনিস চাওয়ার আগেই পেয়ে যেত। সাদিকের বাবা মা  আমার আর সাদিকের অনাবিল বন্ধুত্ব দেখে মুগ্ধ। তারা আমার প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে কার্পণ্য করত না। দুই বন্ধু একে অন্যকে ছাড়া থাকতে পারতাম না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত বদান্যতায় কুন্ঠাবোধ হতো আমার। নিজেকে আড়াল করে রাখার চেষ্টা করতাম কিন্তু সাদিক সেটা করতে দিত না। ধমক মেরে বলত তুই কেন নিজেকে আড়াল করে রাখিস। বন্ধু তুই হচ্ছিস বড়লোক আমি হইছি গরিব। আমি তোর জন্য কিছুই করতে পারি না। তুই আমার জন্য করেই যাবি, আমি শুধু নিয়ে যাব তা কি হয়? আমি তোর জন্য কী করলাম? মাত্র আমরা হাই স্কুলে পড়ি। এখানে তোর জন্য কিই বা খরচ হয়? সিরাজ মুখ মলিন করে বলে, সেই খরচই তো চালাতে পারছি না। তুই বহন করছিস দেখে পারছি। হয়েছে হয়েছে আর বলতে হবে না। তোর যখন যা
লাগে তুই আমাকে বলবি আমি বাবাকে বলে ব্যবস্থা করব।

হাই স্কুলে পড়ার সময় দ্বৈত বন্ধুত্বে আরেকজন যোগ হয়, রেনু। সুন্দরী, বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা। রেনুর মেয়ে বান্ধবীও আছে সবার সঙ্গে তার বনিবনা হয় না। যাদের সঙ্গে হয়, স্কুলের ফাঁকে স্বল্প সময়টুকু গল্পে কেটে যায়। তবে সিরাজ, সাদিকের সঙ্গে গল্প করতে তার বেশি ভালো লাগে। মেয়েদের চেয়ে এদের জ্ঞানের পরিধি অনেক বেশি। রেনুদের টানাটানি সংসার। বাবা একটা মুদি দোকানে চাকরি করে। এক দঙ্গল ভাই বোন। উচ্চাকাঙ্ক্ষী মেয়ে রেনু। তার চলাফেরা কথাবার্তায় বিষয়টি প্রকাশ পায়। দারিদ্র্যের প্রতি তার চরম বিতৃষ্ণা। দারিদ্র্যের সীমাবদ্ধ জীবন থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে ভাবে সে। রেনুর খুব আকাঙ্ক্ষা সে বড় হয়ে বড় চাকরি করবে, অনেক টাকা উপার্জন করবে। বয়স অল্প হলেও তার ভাবনা বিশাল। সব সময় যেন তার বড় হওয়ার স্বপ্ন। স্কুলের বান্ধবীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অনেক সময় দাম্ভিকতা প্রকাশ পায়। তখন তারা বলে, তুই কি ধনী ঘরের সন্তান নাকি? মানুষকে গরিব বলিস! রেনু রেগে গিয়ে বলে, আমি গরিব তাই আমি গরিবদের দেখতে পারিনা। অভাব আমার ভালো লাগেনা। ধনী গরিবের বৈষম্য তাকে খুব পীড়িত করে। পৃথিবীর অল্প কিছু মানুষ ধনী আর অগণিত মানুষ দরিদ্র। বিস্ময়কর ভাবে অল্প কিছু ধনীরাই বিশ্বময় অগণিত দরিদ্রদের শাসন করছে। স্কুলের পাশের মাঠে জনসভায় শুনেছিল এসব কথা। সিরাজ সাদিককে সে কথা বললে তারা হেসে উড়িয়ে দেয়। সিরাজ বলে, রেনু তুই যেভাবে কথা বলিস এভাবে বলা ঠিক না, এতে মানুষ কষ্ট পায়। সাদিক এ বিষয়টা নিয়ে খুব আনন্দ পায়। সে রেনুর কর্মকাণ্ডে অবাক হয়। সিরাজ রেনুকে বুঝায় দেখ সাদিক কত অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলে কিন্তু ওর মধ্যে অহংকার নাই। কথার মধ্যে কোন গরিমা নাই। গরিব দেখলে দূর দূর করে না।

রেনুর প্রতি সিরাজের এক দুর্বার আকর্ষণ আছে। বুঝতে পারে এর নাম ভালবাসা কিন্তু তা প্রকাশ করে না। তার ভাবনা পড়ালেখা শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে তারপর রেনুর কাছে তার ভালোবাসা প্রকাশ করবে। সিরাজ, সাদিক, রেনু কলেজে পড়ে। রেনুর চোখ সাদিকের দিকে। ‌প্রচন্ড ভালোবাসে সাদিককে।‌ সাদিক জানে না রেনু তাকে ভালোবাসে। ‌রেনু ভাবে একটা বিশেষ দিন ঠিক করে সেদিন তার ভালোবাসার কথা সাদিক কে জানাবে। অপেক্ষায় থাকে বিশেষ সেই দিনটির। সাদিক উদাস মনের বন্ধু বৎসল মানুষ, সে ব্যস্ত পড়াশোনা নিয়ে। নিজের ক্যারিয়ার কিভাবে উজ্জ্বল করা যায় ভাবে তাই নিয়ে। অন্তরঙ্গ আলাপে সে মনের কথা খুলে বলে বন্ধু সিরাজকে। সিরাজ বলে, ভাগ্য তোর ক্যারিয়ার অলরেডি করে রেখেছে। তোর বাবার যে অবস্থা তা দিয়ে তুই কয়েক জীবন পাড়ি দিতে পারবি। না বন্ধু তারপরও আমি নিজের চেষ্টায় নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাই।সাদিকদের বাংলো বাড়ি আছে। সেই বাংলো বাড়িতে প্রায় প্রায় পারিবারিক নানা অনুষ্ঠানাদি হয়ে থাকে। এইবার সাদিকের বাবা মইনুদ্দিন অফিসিয়াল বড় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বাংলা বাড়িতে। সেই অনুষ্ঠানে কলেজের কিছু বন্ধু-বান্ধবকে দাওয়াত করে সাদিক। রেনুও আমন্ত্রিত হয় সেই অনুষ্ঠানে। বিশাল বাংলো বাড়ি। সাজসজ্জা দেখে রেনু অবাক এর উপর অবাক। রেনুর ভালোবাসার সৌধের গাঁথুনি অর্থ সম্পদের প্রাচুর্যে আরো মজবুত হয়। সে কল্পনা করতে থাকে তার লালায়িত স্বপ্ন রূপায়ণের। যে করে হোক সাদিক কে তার পেতেই হবে। সাদিকের বউ হলে এই অর্থ সম্পদ সে ভোগ করতে পারবে। অনুষ্ঠানে সাদিককে চোখে চোখে রাখে। কার সঙ্গে মিশছে না মিশছে সেই দিকে লক্ষ্য রেখে সতর্ক দৃষ্টি। সাদিককে নিয়ে বাংলোর একটি রুমে নিরালায় গল্প করতে বসে। সেখানে কথা বলতে বলতে দুজন খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পরে। দুজন আবেগপ্রবণতায় তৈরি হয় চিরন্তন ঘনিষ্ঠতা। উন্মত্ত সাদিক বাংলোতে কী হয়েছিল পরে তা আর মনে করতে পারে না।
বাংলোর অনুষ্ঠানের পর রেনুকে খুব একটা দেখা যায় না। বন্ধুরা উদ্বিগ্ন হয় তার কুশলাদি জানার জন্য। মাস তিনেক পর সে সরাসরি সাদিকের কাছে এসে বলে, তোমার সঙ্গে জরুরী কথা আছে। সাদিক ঘাবড়ে যায় রেনুর সিরিয়াসনেস দেখে। সাদিক বলে, কী হয়েছে বলো? সাদিক কোন ভঙ্গীতা না করে তুমি আমাকে বিয়ে করো।সাদিক চমকে উঠে, বিয়ে করবো আমি তোমাকে! দেখো দুষ্টুমি করো না আমার সঙ্গে।
না, সাদিক আমি তোমার সঙ্গে দুষ্টামি করছি না। দেখো রেনু আমি তোমাকে বন্ধু ভাবছি আগামীতেও বন্ধু ভাববো এর বাইরে কিছু না।কিন্তু আমাকে যে তোমার বিয়ে করতেই হবে? বিয়ে না করে তোমার কোন উপায় নেই। সাদিক কিছু না বলে চোখ মুখ কুঁচকে অবাক হয়!সিরাজ বলে, জানিস না রেনু সব সময় অবাক করা কথা বলে। বন্ধু তো তাই মজা নিচ্ছে কথা বলে। রেনু ক্ষুব্ধ কন্ঠে সিরাজ কে বলে, এর মাঝে তুমি এসো না, এখানে যা বলার, বলব আমি আর সাদিক। সিরাজ বলে, ঠিক আছে, তোমরা কথা বলো আমি কিছু বলবো না। রেনু বলে, সাদিক তোমার বাচ্চা আমার পেটে। তাই দ্রুত আমাকে তোমার বিয়ে করতে হবে!কি বলো যাকে ভালবাসি না, বিয়ে করি নাই তার গর্ভে আমার সন্তান! না এটা আমি মানতে পারছি না। সাদিক কিছুতেই রেনুকে বিয়ে করতে চায় না।

সিরাজ বলে সাদিকে, বন্ধু তোদের কী হয়েছে আমাকে খুলে বল? এই ব্যাপার নিয়ে সাদিক খুব পেরেশানি মধ্যে আছে। সিরাজ বলে, তুই আমার ছোট কালের বন্ধু তোকে আমি কোন কিছুই অজানা রাখি না। ও কি বলছে আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আর এই মেয়েকে আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব না। যে গরিব হয়েও গরীব কে দেখতে পারে না, যার এত দেমাগ, এত দাম্ভিকতা। সেই মেয়ে আর যাই হোক আমার বউ হতে পারে না। আমার পরিবার এ ধরনের ঘটনা কিছুতেই মেনে নেবে না! এ ঘটনা প্রকাশিত হলে আমার আত্মহত্যা ছাড়া উপায় থাকবে না। বলে সাদিক চলে যায়। সিরাজের কাছে এই ঘটনায় তড়িৎ আহতের মতো। সে ছোটবেলা থেকেই অনুরক্ত রেনুর প্রতি কিন্তু কখনো তা প্রকাশ করেনি। আজ রেনুর এই সংকটকালে আত্ম বলিদানের উপমা আপন করতে চায়। রেনুর উদাস নয়নে অশ্রু ধারা। অনেক কষ্টে বলে, আমার আত্মহত্যা ছাড়া উপায় দেখছি না। সিরাজ নিজেকে যথা সম্ভব প্রস্তুত করে পরিস্থিতি মোকাবেলায়।

সিরাজ সম্মুখীন হয় রেনুর। সে রেনুকে বলে, তুমি যদি চাও আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারি। আমার পিতৃপরিচয়ে
ভূমিষ্ঠ হবে তোমার সন্তান। রেনু এমন সংকট পূর্ণ অবস্থায়ও, তার কথার দেমাগ কমে না। ‌সে সিরাজ কে বলে, তোকে বিয়ে করলে আজীবন থাকতে হবে দারিদ্র্যের মধ্যে। সে তো আত্মহত্যার মতোই আর একটা ব্যবস্থা। সাদিক বলে, তোমার প্রতি একনিষ্ঠ ভালবাসায় আমার কৈশোর যৌবন কেটেছে। তোমাকে বুঝতে দেইনি। আমার টাকা পয়সা না থাকতে পারে আমি তোমাকে ভালবাসতে পারব অপরিসীম। ভালোবাসার মানুষের আজ এই সংকটকালে জীবন দিয়ে হলেও সাহায্য করতে চায় সে। ভালোবাসা দিয়ে আমি কী করবো? আমি চাই সাদিককে। ওর বিশাল সম্পদ ও আমাকে সুখে রাখতে পারবে। টাকা পয়সা ছাড়া ভালবাসার সমুদ্রও শুকিয়ে যায়। আমি গরিব আমার মতো গরিব কাউকে চাই না। এমন অবজ্ঞা এবং অপমানের
পরেও ক্ষান্ত হয় না সিরাজ। সাদিক যদি মেনে না নেয় কি হবে ভেবে দেখেছো। রেনু দেমাগ নিয়ে বলে, ওর যে মানতেই হবে! তবে রেনুর গরিমা যেন কমেই না। সিরাজ তারপরও বলে, তোমার যদি কোন প্রয়োজনে আমাকে দরকার হয় বোলো। আমি তোমার পাশে থাকার চেষ্টা করব। আমি যে তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তোমার ওই শুকনো ভালোবাসা আমার দরকার নেই।

রেনু কিছুতেই সাদিকের দেখা পায় না। সাদিক কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সাদিকের বাড়ির গেট যে দারোয়ান থাকে টক্কর দিয়ে যাওয়া সম্ভব না। সাদিককে দেখতে পায় তার বাসায় বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসে আছে। সাদিক বলে ডাকা শুরু করে রাস্তা থেকে। সাদিক ভয় পেয়ে যায় যদি বাবা জানতে পারে না জানি কী ঘটে! দ্রুত সে বাসা থেকে নেমে রেনুর সামনে যায়। রেনু তুমি এখানে এসেছ কেন? তোমার সন্তান আমার পেটে আমি তোমার কাছে না এসে কোথায় যাব? তুমি কি আমাকে বিপদে ফেলে বিয়ে করতে চাও? আমি কিন্তু তা হতে দেব না। দেখো সাদিক কোন মেয়ে আর যাই করুক পেটের সন্তান নিয়ে মিথ্যা বলে না। তুমি আমাকে আর আমার সন্তানকে বাঁচাও। আমার পারিবারিক মর্যাদায় আমি কিছুতেই এভাবে অসম্পাদিত হতে দিব না। আমি তোমাকে চাইনা রেনু। ‌তুমি আমাকে তোমার কাছ থেকে মুক্ত করো। না হয় আমি আত্মহত্যা করব। রেনু ভয় পায়, তুমি আত্মহত্যা করবে! ঠিক আছে তোমার আত্মহত্যা করতে হবে না। সাদিক এই পেশার নিতে পারছিল না। সে ভাবে সমাজে কী করে মুখ দেখাবে। বাবা-মায়ের সামনে আত্মীয়-স্বজনের সামনে। এ কারণে তাকে কলেজ ছাড়তে হয়েছে। এই ঘটনা রটে গেলে তার বাবার মান সম্মান শেষ হয়ে যাবে। তারপর তার বাবা তাকে ত্যাজ্যপুত্র করবে। রেনু যদি আইন আদালত বিচার সালিশ করে। সকলেই অঙ্গুলি নির্দেশ করবে এই ছেলেটার এই কাজ! সাদিক আত্ম দংশনে জর্জরিত হতে থাকে। ‌বেসামাল হয় কোন লোড নিতে না পেরে আত্মহত্যা করে।‌

রেনু ভাবে সাদিক তাকে গ্রহণ করবে না সমাজে এই মুখ দেখাবে কিভাবে! সে আত্মহত্যা করে! দুই দিকে দুই আত্মহত্যা দেখে সিরাজও সিদ্ধান্ত নেয় সে আত্মহত্যা করবে। কিন্তু নাজমার ধাক্কায় সব ওলট পালট হয়ে যায়। যে বন্ধু তার জন্য এত কিছু করলো আর যাকে সে ভালোবাসে সে পৃথিবীতে নেই, সে পৃথিবীতে থেকে কী করবে। তাই সিরাজ নিজেও আত্মহত্যা করে দুনিয়া ছাড়তে চায়। এ কথা শুনে পোড় খাওয়া নাজমা বলে, ভালোবাসার জন্য নিজের
জীবন দিতে চায় হারাতে চাই না এমন মানুষ। ভালোবাসব তোমাকে। আমি তোমাকে পেতে চাই। হবে কি তুমি আমার? সিরাজ হাতটি বাড়িয়ে দেয় নাজমার হাতের উপর। হ্যাঁ হবো আমি তোমার।