কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ কর্মসংস্থানের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছিলেন প্রতিবন্ধী আনিছুর রহমান। শারীরিক প্রতিবন্ধী আনিছুর রহমান কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে দর্শন বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। সরকারি চাকুরি পাবার জন্য পরীক্ষাও দিয়েছেন বহুবার কিন্তু কোন চাকরী মিলেনি। কয়েক বছর যাবত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাকরির জন্য একের পর এক দিচ্ছিলেন পোস্ট। কয়েকদিন আগে ফেইসবুকে চাকুরির প্রত্যাশায় আবারও একটি পোস্ট দেন। পোস্টটি নজরে আসে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জার। তিনি পুনাকের পক্ষ থেকে আনিছুর রহমানকে সহযোগিতা করার জন্য কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) এর সাথে কথা বলেন। পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) আনিছুর রহমানের খোঁজ নিয়ে সত্যতা পান।
পুলিশ সুপার ডেকে আনেন আনিছুর রহমানকে। তার সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলে জানেন আনিছের বোনটিও একজন প্রতিবন্ধী (বি এ অনার্স) পড়ছেন। কিশোরগঞ্জ জেলা পরিবহন মালিক সমিতির আহবায়ক লেলিন রায়হান শুভ্র শাহীনকে বিষয়টি অবহিত করেন পুলিশ সুপার। আহবায়ক লেনিন তৎক্ষণাত তাকে জেলা পরিবহন মালিক সমিতির কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকুরি প্রদান করেন। পুনাক সভানেত্রীর মহানুভবতায় অবশেষে চাকরি পেলেন প্রতিবন্ধী আনিছ।
অতঃপর মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভা কক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জার পক্ষ থেকে আনিছুরকে একটি কম্পিউটার উপহার এবং চাকুরির নিয়োগ পত্র আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়।
কিশোরগঞ্জ জেলা পুনাকের সভানেত্রী মাহফুজা নাজনীন দিষার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহবায়ক লেলিন রায়হান শুভ্র শাহীন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. মোস্তাক সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. নূরে আলম, কিশোরগঞ্জ পুনাকের সহ-সভানেত্রী ডাঃ তাসলিমা সুলতানা সেতু, রোজলিন শহীদ চৌধুরী, প্রিয়াংকা নাথ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিছ বেগম, কিশোরগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ দাউদ, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সদস্য-সচিব শেখ ফরিদ আহম্মদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অনির্বাণ চৌধুরী।
চাকুরী পেয়ে আনিছুর রহমান বলেন, সংসারের খরচ চালাতে একটি চাকুরির জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি দিনের পর দিন। কিন্তু কারও কাছ থেকে কোন সাড়া পাইনি। পুনাক ও পরিবহন সমিতির পক্ষ থেকে চাকুরি ও কম্পিউটারের ব্যবস্থা করায় আমি তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) বলেন, সমাজে এমন অনেক আনিছুর রয়েছে। তেমনি চাকুরি দাতারাও রয়েছে। তাদেরকে খোঁজে এনে সহায়তা করলে পরিবার, সমাজ ও দেশ উপকৃত হবে।
পরে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আনিছুরকে তার কর্মস্থলে গিয়ে দিয়ে আসেন ও মালিক পরিবহন সমিতি তাকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন।