আজ ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কুড়িগ্রামে ৬৩১টি ভূমিহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার 

আসলাম উদ্দিন আহম্মেদ, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ৬শ ৩১টি ভূমিহীন পরিবারের কাছে জমির দলিলসহ আঁধাপাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার  সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশব্যাপী প্রধানমন্ত্রী এ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন। এরই অংশ হিসেবে তৃতীয় দফায় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ৮২, নাগেশ্বরীতে ১৩০, ভুরুঙ্গামারীতে ৭৯, ফুলবাড়ীতে ১৬২, রাজারহাটে ১৫০ উলিপুরে ১৮০, চিলমারীতে ২৭০, রৌমারীতে ৫৫ ও  রাজীবপুর উপজেলায় ১১১টি ভূমিহীন পরিবারের হাতে উপহার হিসেবে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়।
মঙ্গলবার সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের ধরলা আবাসনে ৩৮টি পরিবারের মাঝে ঘর ও জমির দলিল  হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম-২ আসেনর সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহম্মেদ মঞ্জু, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেদুল হাসান প্রমুখ।
উলিপুর উপজেলায় ৪২টি ঘরের দলিলপত্র ভূমিহীনদের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের সময় উপজেলা  অডিটোরিয়াম হলে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম- ৩ আসনের মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা  গোলাম হোসেন মন্টু, পৌর মেয়র মামুন সরকার মিঠু,  উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমারসহ সংশ্লিষ্ট অফিস প্রধানগণ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও উপকারভোগীগন।
 ধরলা পারের আবাসন প্রকল্পে জমির দলিল পাওয়ার পর আবেগ আপ্লুত উপকারভোগী বিধবা রাহেলা জানান, ৭ বছর আগে তার স্বামী মারা যাওয়ার পর অনেক কষ্টে দুটি মেয়েকে বড় করেছেন। নিজের ঘর ছিলনা, জমিও ছিলনা। অন্যের বাড়িতে আশ্রিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই ঘর পেয়ে তিনি বেজায় খুশি।
জেলা প্রশাসন সুত্র জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কুড়িগ্রাম জেলায় ৪ হাজার ১২০টি ভূমিহীন পরিবার তালিকা  ভূক্ত করা হয়। এর মধ্যে প্রথম দফায় ১ হাজার ৫ শ ৬৯, দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ৭০ ও তৃতীয় দফায় ১ হাজার ২শ ৫৯টিসহ মোট ৩ হাজার ৮শ ৯৮টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য ঘর বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ২৭০টি পরিবারের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এ জন্য ৩ একর ৬৭ শতক খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া চর এলাকায় বিশেষভাবে তৈরী ৩’শ৯২টি ঘর শীঘ্রই হস্তান্তর করা হবে।
সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মন্জু বলেন, প্রধানমন্ত্রী মানুষের কষ্ট বোঝেন এজন্য তিনি ভূমিহীন মানুষকে ঘর দেয়ার মতো এ মহান কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেদুল হাসান জানান, প্রকৃত উপকারভোগী নির্বাচনে অনিয়ম রোধে তিনি নিজেই সরেজমিনে গিয়ে উপকারভোগী নির্বাচন করেছেন। উলিপুর উপজেলা নির্বাহি অফিসার বিপুল কুমার বলেন,ঘর নির্মাণে গুণগত মান রক্ষায় তিনি নিজে শতভাগ কাজ মনিটরিং করেছেন। তার বিশ্বাস ঘরের কাজ অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো হয়েছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রীর এই মহতী উদ্যোগ যাতে সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন হয়, সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে থেকে নিবিড়ভাবে তত্বাবধান করে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। ঈদের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রীর  উপহার পেয়ে খুশি হয়েছেন অনেক গৃহহীন পরিবার।

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ