আজ ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের কল্যাণ অনুদান ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে কিশোরগঞ্জে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, কল্যাণ অনুদান ও আর্থিক সহায়তাপ্রাপ্তদের ৯০ ভাগই ধনী শ্রেণীর। আবেদনে উল্লেখিত বিষয় যাচাই-বাছাই ছাড়াই কিভাবে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে পৌঁছালো তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে কল্যাণ অনুদান ও আর্থিক সহায়তাপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করার পর সচেতনমহল এ বিষয়ে তাদের ফেসবুক আইডি থেকে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের কল্যাণ অনুদান ও আর্থিক সহায়তাপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ হবার পর থেকেই এ নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে কিশোরগঞ্জে। আলী রেজা সুমনের ফেসবুক আইডিতে করা একটি পোস্টে কমেন্ট করেছেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সুবীর বসাক। তিনি লিখেছেন, অসুখ-বিসুখ যে কারোরই যে কোনো সময় হতে পারে। আমাদের এতো সহকর্মী যে অসুস্থ তা আগে আমার জানা ছিলো না। এজন্য দু:খিত। সবারই আশু রোগমুক্তি কামনা করছি। নিসচার সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিক কবীর লিখেছেন, সবচেয়ে বেশি অসুস্থ, যিনি তালিকা তৈরি করেছেন। উনাকেও একটা বরাদ্দ দেওয়া হোক। আর সকল অসুস্থ রোগীকে আল্লাহ সুস্থতা দান করুন, আমীন।
অনুদানপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও যুদ্ধাপরাধ মামলার স্বাক্ষী সুরক্ষা কমিটির কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি রেজাউল হাবিব রেজা বলেন, আমি সরকারি অনুদান এবারই শুধু পেলাম। এর মধ্যে যারা স্বাধীনতাবিরোধী উত্তরসূরী আছেন তারা এরূপ সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করুক সেটা আমি চাইনা। আর যারা সাংবাদিকদের আওতায় পড়েনা। তাদের বেলায় এমন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ অগ্রহণীয়। অনেক সাংবাদিক আছে যারা লেখালেখিতে সক্রিয়, অর্থনেতিক সমস্যায় আছে এসব সংবাদকর্মীকে কল্যাণট্রাষ্ট থেকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদান করা দরকার।

কিশোরগঞ্জ টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সোহেল চৌধুরী বলেন, সুস্থ মানুষগুলো অসুস্থ সেজে সরকারি টাকা গ্রহণ করেছে এটা এক ধরনের প্রতারণা।
কিশোরগঞ্জ জেলা রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আলী রেজা সুমন বলেন, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা যাচাই বাছাই না করে দেয়া জেলা পর্যায়ের সাংবাদিকদের এক ধরনের দুর্নীতি। যাচাই বাছাই কমিটি থেকে এই ধরনের সাংবাদিকদের বাদ দেয়া খুবই জরুরি। এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসক সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন আশা করি।
সিনিয়র সাংবাদিক সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন বলেন, একইসাথে এতজন সাংবাদিক অসুস্থ, সেটাই আশ্চর্যের বিষয়। কেউ অসুস্থ হলে অন্তত নিজেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে গোপনীয়তা কেন? কে তাদেরকে রোগী হিসেবে সনদ দিয়েছে, আর যাচাই বাছাই ছাড়া এমন সনদের ওপর ভিত্তি করে সহায়তা পেলো কেমন করে?

সনাক সভাপতি ও দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার সাইফুল হক মোল্লা দুলু বলেন, সাংবাদিকেরা হল সমাজের দর্পণ, সাংবাদিকেরা নীতি নৈতিকতার মধ্যে থাকবে, তারা যদি এরকম কাজ করে তবে তা সাংবাদিকদের জন্য লজ্জাজনক ও দুঃখজনক এবং এরা প্রকৃত সাংবাদিক কিনা এতে আমার সন্দেহ আছে?
কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহবায়ক এবিএম লূৎফর রাশিদ রানা বলেন, যারা সচল অথচ অস্বচ্ছল এবং চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা পান তা দুঃখজনক। এতে প্রকৃত অস্বচ্ছল ও আর্থিকভাবে দুর্বল সৎ সাংবাদিকগন বঞ্চিত হন।
একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে ধন্যা দিয়ে কতিপয় সাংবাদিক তাদের আবেদন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ