আজ ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এবারও রেকর্ড পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৩কোটি ৮৯ লক্ষ ৭০হাজার ৮৮২ টাকা

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বাক্সে ৩ মাসে মিলেছে ৩কোটি৭০লাখ ৮৮২ টাকা। এছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমান স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা। আগে এসব অর্থ জেলার অন্যান্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার উন্নয়নসহ গরীব মেধাবী ছাত্রদের জন্য ব্যয় করা হলেও, এবার পাগলা মসজিদকে আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লেক্স বানানোর কাজে এসব টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মসজিদের লোহার দানবাক্স যেন টাকার খনি। বাক্স খুলতেই শুধু টাকা আর টাকা। এসব টাকা বস্তায় ভরে নেয়া হয় ঐ মসজিদেরই দোতলায়। পরে, মসজিদের মেঝেতে বসে টাকা গুনেন শতাধিক মাদ্রাসা ছাত্রসহ প্রায় পঞ্চাশ জন ব্যাংক কর্মকর্তা। বছরের কয়েকবারই এমন দৃশ্যের দেখা মিলে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে।

শনিবার সকালে মসজিদের ৮ টি দানবাক্স খুলে বের করা হয় সাড়ে ১৫ বস্তা টাকা। দিনভর গননা শেষে টাকার পরিমান দাঁড়ায় কোটি লক্ষ টাকা ও প্রচুর পরিমান স্বর্ণাঙ্কার এবং বৈদেশিক মুদ্রা।

এর আগে চলতি বছর জুলাই মাসের দুই তারিখে এই আটটি দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিলো ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ স্বর্নলংকার ও বিদেশি মূদ্রা।

এ মসজিদে সঠিক নিয়তে মানত করলে রোগ-বালাই দূর হওয়া সহ বিভিন্ন মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এমন বিশ্বাস থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সকল ধর্মের মানুষ প্রতিনিয়ত মানতের নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার, বৈদেশিক মুদ্রা, ছাগল, হাস, মুরগী সহ বিভিন্ন সামগ্রী দান করে থাকেন।

নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ছাড়া দানের বিভিন্ন সামগ্রী প্রতিদিন নিলামে বিক্রি করে রূপালী ব্যাংকে থাকা মসজিদের একাউন্টে জমা করা হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে এই মসজিদটি ওয়াকফের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। জানালেন মসজিদের এই কর্মকর্তা।
শওকত আলী (প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পাগলা মসজিদ)

ব্যাংকে রাখা টাকার লাভের অংশ দরিদ্র জটিল রুগীদের চিকিৎসাখাতে ব্যায় করা হয়। জানান,মাহমুদ পারভেজ পাগলা মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি।

দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত এ পাগলা মসজিদকে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স নির্মাণ করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন পাগলা মসজিদের সভাপতি মোহাম্মদ শামীম আলম (জেলা প্রশাসক কিশোরগঞ্জ ও সভাপতি, পাগলা মসজিদ।

জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় আড়াই’শ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা জেলা শহরের হারুয়ায় থামেন। তাকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন। ওই পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে। পরে কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।

 

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ