আজ ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন সৈয়দ পরিবারের তিন ভাই-বোন

নিজস্ব প্রতিনিধি: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর) আসন থেকে  মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পরিবারের তিন ভাই-বোন।
তারা হলেন বর্তমান জাতীয় সংসদের এ আসনের সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ডা: সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, তার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম এবং তাদের চাচাতো ভাই জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাফুল ইসলাম টিটু।
এদের মধ্যে সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
বাকি দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে কিশোরগঞ্জের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের কাছে তারা মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এর মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাথমিক যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন সৈয়দ পরিবারের তিন ভাই-বোন।
এই তিনজন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের দুই সন্তান ও ভাতিজা।
একই সংসদীয় আসন থেকে জাতীয় পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টিসহ আরো কয়েকটি মনোনয়ন পত্র জমা পড়লেও মানুষের মুখরোচক আলোচনায় তিন ভাই বোনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি।
এ বিষয়ে সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘ গণতন্ত্রের সবার রাজনীতি করার ও সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার অধিকার আছে। তাছাড়া এ বছর আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বিষয়টা ওপেন করে দিয়েছেন- দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে চাইলে যে কেউ স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারবে। তাই আমি প্রার্থী হয়েছি। ‘
সৈয়দ আশফাফুল ইসলাম টিটু বলেন,
‘রাজনীতি তো পরিবার কেন্দ্রিক হয় না, রাজনীতি হয় আদর্শিক। যোগ্যতা থাকলে এক পরিবার থেকে দুইজন তিনজন প্রার্থী হতেই পারে। সেক্ষেত্রে জনগণ বিচার করবে কাকে ভোট দিলে, কাকে নির্বাচিত করলে কিশোরগঞ্জের উন্নয়ন হবে।’
আওয়ামী লীগের দলীয় একাধিক সূত্র জানায়,
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মরহুম সৈয়দ নজরুল ইসলামের বড় ছেলে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক  সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সর্বশেষ কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নির্বাচিত হলেও শপথ নেয়ার পূর্বে ৩ জানুয়ারি ২০১৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ফলে কিশোরগঞ্জ-১ আসনটি শূণ্য হয়ে যায়। পরে উপনির্বাচনে তার ছোট বোন জাকিয়া নূর লিপি বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সংসদ সদস্য মনোনীত হন। ওই উপনির্বাচনে তার বড় ভাই মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম দলের মনোনয়ন চেয়েও পাননি।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি নির্বাচনী এলাকায় নিজের বলয় তৈরি করেন । তার বড় ভাই সৈয়দ সাফায়েতও রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থেকে নিজের আলাদা একটি বলয় তৈরি করেন। তাদের চাচাতো ভাই সৈয়দ আশফাকুল ইসলামও রাজনীতির মাঠে আলাদা সক্রিয় ছিলেন। বিগত দিনগুলোতে সৈয়দ পরিবারের তিন ভাই–বোন আলাদাভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
তিন ভাই–বোনের আলাদাভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের পর এবার মনোনয়ন কেনার বিষয়টি নিয়ে দলের ভেতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেও দেখছেন। বিষয়টি সাধারণ মানুষের মধ্যে মুখরোচক আলোচনাও সৃষ্টি করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন সারা দেশের মতো সকাল দশটা থেকে মনোয়ন ফরম জমা নেয়া শুরু করে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির মনোনয়নপত্র জমা দেন তার ছোট বোন সৈয়দা রাফিয়া নূর রুপা।
সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের মনোনয়নপত্র জমা দেন তার বড় ছেলে সৈয়দ নাফিস নজরুল রাইয়ান। সৈয়দ আশফাফুল ইসলাম টিটু নিজে এসে জমা দেন তার মনোনয়নপত্র।
কিশোরগঞ্জে ৬ আসনে মোট ৫৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা করেন।

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ