আজ ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৬ কোটি ৩২লাখ ৫১হাজার ৪২৩ টাকা

ফারুকুজ্জামান, কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বাক্সে ৩ মাস ২০ দিনে মিলেছে ৬ কোটি ৩২লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা। এছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমান স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা। আগে এসব অর্থ জেলার অন্যান্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার উন্নয়নসহ গরীব মেধাবী ছাত্রদের জন্য ব্যয় করা হলেও, এবার পাগলা মসজিদকে আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লেক্স বানানোর কাজে এসব টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

মসজিদের লোহার দানবাক্স যেন টাকার খনি। বাক্স খুলতেই শুধু টাকা আর টাকা। এসব টাকা বস্তায় ভরে নেয়া হয় ঐ মসজিদেরই দোতলায়। পরে, মসজিদের মেঝেতে বসে টাকা গুনেন শতাধিক মাদ্রাসা ছাত্রসহ প্রায় পঞ্চাশ জন ব্যাংক কর্মকর্তা। বছরের কয়েকবারই এমন দৃশ্যের দেখা মিলে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে। শনিবার ৯ ডিসেম্বর সকাল পৌনে ৮টায় মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে বের করা হয় ২৩ বস্তা টাকা। দিনভর গননা শেষে টাকার পরিমান দাঁড়ায় ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১হাজার ৪২৩ টাকা ও প্রচুর পরিমান স্বর্ণাঙ্কার এবং বৈদেশিক মুদ্রা।

এর আগে চলতি বছরের ১৯ আগষ্ট আটটি দানবাক্সে ২৩ বস্তায় পাওয়া গিয়েছিলো ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ স্বর্ণলংকার ও বিদেশি মূদ্রা। এ মসজিদে সঠিক নিয়তে মানত করলে রোগ-বালাই দূর হওয়াসহ বিভিন্ন মনোবাসনা পূর্ণ হয়।

এমন বিশ্বাস থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সকল ধর্মের মানুষ প্রতিনিয়ত মানতের নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার, বৈদেশিক মুদ্রা, গরু,ছাগল, হাস, মুরগীসহ বিভিন্ন সামগ্রী দান করে থাকেন। নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ছাড়া দানের বিভিন্ন সামগ্রী প্রতিদিন নিলামে বিক্রি করে রূপালী ব্যাংকে থাকা মসজিদের একাউন্টে জমা করা হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে এই মসজিদটি ওয়াকফের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। জানালেন মসজিদের সাধারণ সম্পাদক পৌরমেয়র মাহমুদ পারভেজ । ব্যাংকে রাখা টাকার লাভের অংশ দরিদ্রজটিল রুগীদের চিকিৎসাখাতে ব্যায় করা হয়।

দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত এ পাগলা মসজিদকে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স নির্মাণ করার কাজ হবে বলে জানালেন পাগলা মসজিদের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।

জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় আড়াইশ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা জেলা শহরের হারুয়ায় থামেন। তাকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন। ওই পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি ৩ একর ৮৮ শতাংশ জমির উপর গড়ে ওঠে। পরে কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ