আজ ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে শোলাকিয়া ঈদগাহ,জামাত শুরু সকাল ১০টায়

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান।ঈদুল ফিতরের ১৯৭তম জামাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
এবার সকাল ১০টায় শুরু হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। জামাতে যথারীতি ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
জানা যায়, আবারও লাখো মুসল্লির পদভারে মুখর হবে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। জামাতে আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তায় কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। দিন-রাতের পরিশ্রমে নামাজের উপযোগী হয়ে উঠছে প্রিয় ঈদগাহ ময়দান। আয়োজনের তোড়জোড় দেখে খুশি এলাকাবাসী।
এরই মধ্যে মাঠে দাগ কাটা, বালু ফেলা, দেয়াল রং করার কাজ শেষ হয়েছে। সংস্কার হয়েছে অজুখানা ও শৌচাগার। চলছে শহরের শোভাবর্ধনের কাজও। দূরের মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। প্রস্তুত রাখা হেয়েছে যথেষ্ট স্বেচ্ছাসেবক ও কয়েকটি মেডিক্যাল টিম।
জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, সব প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মুসল্লিরা যেন নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে পারেন সেজন্য আমরা সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। একটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল আয়োজনের মধ্য দিয়ে ১৯৭তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
জানা যায়, নামাজের সময় বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিশিছদ্র নিরাপত্তাবলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করবেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।এছাড়া মাঠসহ প্রবেশ পথগুলোতে থাকছে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। আকাশে উড়বে পুলিশের ড্রোন ক্যামেরা।
জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা থাকবে শোলাকিয়া ঈদগা ময়দান। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে মুসল্লিদের প্রবেশ করতে হবে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে শুধু জায়নামাজ নিয়ে মুসল্লিরা প্রবেশ করতে পারবেন। মোবাইল বা ছোটখাটো ডিভাইস নিয়ে মাঠে প্রবেশ না করার জন্য আমরা প্রচার করছি। আশা করছি, সুন্দর পরিবেশে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, মুসল্লিদের জন্য সুপেয় পানি, মেডিক্যাল টিম, দূরের মুসল্লিদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ নানা আয়োজন সম্পন্ন করা হচ্ছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে মাঠের ও আশপাশের সৌন্দর্যবর্ধন ছাড়াও রাস্তাঘাট মেরামত করা হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সব ধরনের কাজ করে যাচ্ছি।
রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে ছোড়া হয় শটগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি। নামাজের ৫ মিনিট আগে তিনটি, ৩ মিনিট আগে দুটি এবং ১ মিনিট আগে একটি গুলি ছুড়ে নামাজ শুরুর সংকেত দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, কিশোরগঞ্জের হয়বতনগর সাহেব বাড়ির পূর্ব পুরুষ শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ ১৮২৮ সালে নরসুন্দা নদীর তীরে ৭ একর জমির উপর এ ঈদগাহ ময়দান প্রতিষ্ঠা করেন।
জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এই মাঠের নাম দেওয়া হয়েছে সোয়া লাখিয়া। যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত।

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ