আজ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অলক্ষ্যে হারিয়ে যায়-সুলেখা আক্তার শান্তা

জুঁই আর মিলি দুই বান্ধবী একত্রে ভার্সিটিতে যাওয়ার পথে অনেক আলাপ করে। কে কিভাবে জীবন সাজাবে, কার কি
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। কার কেমন জীবন সঙ্গী হবে। স্বপ্ন কল্পনা নিয়ে আরো অনেক আলাপ। জুঁইয়ের এক কথা জীবন সাথী
যে হবে তাকে অনেক সুন্দর মানে হ্যান্ডসাম হতে হবে, নয়তো সে কাউকে জীবনসঙ্গী করবে না। একথায় দ্বিমত পোষণ
করে মিলি। এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে কি জীবন চলে? ধর তোর জীবনে যদি কালো কেউ আসে। না তাহলে তাকে আমি গ্রহণ
করবো না। তুই তো তাহলে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছিস। কঠিন সিদ্ধান্ত কিনা জানিনা এটা আমার মনের আকাঙ্ক্ষা।
তাই তো দেখছি। কত ছেলে প্রস্তাব দিলো কারোরই প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণ করলি না। ঠিক আছে অপেক্ষা করে দেখ সুন্দর
ছেলে আসতেও পারে তোর জীবনে। তুই আমার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী আমার জন্য মন থেকে দোয়া করিস। দোয়া করি তোর
মনের আশা পূর্ণ হোক।
সজীব ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন এমনকি চুপচাপ স্বভাবের ছেলে। কারো সাথে কখনো কোন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব হয় না। কারো কোন
ঝামেলা দেখলে সমাধান করে দেওয়ার চেষ্টা করে। পড়ালেখা তার ধ্যান জ্ঞান। সে জগত নিয়েই সে সর্বদা ব্যস্ত। গায়ের
রং তার ফর্সা নয় সে শ্যামলা বর্ণের মানুষ। ব্যক্তিত্বের কারণে ভার্সিটির অনেক মেয়ে তাকে পছন্দ করে। সজীবের কথা,
এখানে পড়ালেখার  জন্য এসেছি প্রেম করতে নয়। জীবন সাথী নির্ধারণের দায়িত্বটা বাবা-মার উপর ছেড়ে দিয়েছে।
সজীবের আচরণ চোখে পড়ে জুঁইয়ের। সাধারণত ছেলেরাই প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। সেখানে সজীবকে মেয়েরা প্রেমের
প্রস্তাব দিলেও সে গ্রহণ করে না। সজীবের সব বিষয়েই ভালোলাগে জুঁইয়ের। জুঁইয়ের ধ্যান-ধারণায় চিন্তা ছিল সুন্দর
হ্যান্ডসাম ছেলে ছাড়া সে কাউকে জীবন সাথী করবে না। কিন্তু সজীবের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য দেখে মুগ্ধ হয়ে সে নিজেই প্রেমের
প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সজীব তাতে কোন সাড়া দেয় না। এভাবে একদিন দুদিন করে মাস দুয়েক নিরবে পার হয়ে যায়।
অধৈর্য হয়ে জুঁই মনক্ষুন্ন বোধ করে। সেই সরাসরি সজীবকে বলে, কেন তুমি আমার প্রস্তাব গ্রহণ করছো না? সজীব ভেবে
পায় না এ প্রশ্নের কি উত্তর দেবে। বলে, কত মেয়েই তো প্রেমের প্রস্তাব দেয়। আমার একার পক্ষে কি সবার প্রেম গ্রহণ করা
সম্ভব? আমি মানুষ হচ্ছি একজন প্রেমের প্রস্তাব আসে অনেক। আমি কাউকে কাঁদাতে চাইনা। একজনকে গ্রহণ করে
অন্যজনকে ফিরিয়ে দেব এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। উত্তর শুনে জুঁই তাজ্জব বনে যায়। বিষয়টি গুরুত্ব দিতে গম্ভীর হয়ে
বলে, আমাকে অনেকেই ভালোবাসে, আমি কারো ভালোবাসায় সাড়া দেইনি। তোমাকে আমার ভালো লাগছে তাই আমি
নিজ থেকেই তোমাকে প্রস্তাব দিয়েছি। তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিও না। দেখো আমি যদি কাউকে ভালোবাসি তাকে
হারানোর জন্য না। তাকে জীবনসঙ্গী করার জন্য। হ্যাঁ আমি তো জীবনসঙ্গী হতেই চাই, আমি কি হারিয়ে যাওয়ার জন্য
ভালোবাসব? জুঁই গুরুত্ব দিয়ে বোঝাতে চেষ্টা করে। ফিরে যাও। প্রেমকে পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না হলে
সবকিছুই অর্থহীন। আমি আমার বাবা-মায়ের পছন্দ বিয়ে করব।
আমাকে কি তোমার পছন্দ সই নয়?
দেখো প্রশ্ন করোনা! আমি এ প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত নই।
জুঁই মরিয়া হয়ে ওঠে। এ যেন তার জয় পরাজয়ের প্রশ্ন। সজীব আমাকে ফিরিয়ে দিও না। আমি তাহলে মরে যাব। মরবা
কি বাঁচবা সে কথা বলে লাভ নেই।
অহং বোধ জুঁইকে পীড়িত করে। আত্ম অহংকারের এমন পরাজয় কিছুতেই মানতে পারেনা সে। জুঁই ভেঙ্গে পড়ে। সে
ভার্সিটি যাওয়া বন্ধ করে দেয়। মিলি জুঁইকে দেখে তার মানসিক এবং শারীরিক অবনতির পরিমাণ বুঝতে পারে। সে
জুঁইকে বুঝায়, দেখ কেউ যদি না চায় তাকে তো জোর করা যায় না। তোকেও যেমন অনেকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় তুই
তাতে রাজি হোস না। সজীবকেও অনেকে প্রস্তাব দেয় সে রাজি হয় না। জুঁই বলে, সেই অনেকের মধ্যে কি আমি পড়ি?
মিলি বলে, তুই কি আলাদা? নয়তো কি? তোর মন খারাপের মধ্যে ও তোর কথা শুনে হাসি পায়। তুই যদি তার আপন
হোতি তাহলে সে তোকে আপন করেই নিত। খোঁচা মারিস না তো এ খোঁচা গায়ে বিঁধে। তোকে খোঁচা মারলাম  কোথায়?
তুই আমার বান্ধবী একজনের জন্য তুই কষ্ট পাচ্ছিস। ভার্সিটি যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিস এটা কি আমার ভালো লাগে? জুঁই
বলে, কি করব আমার চোখে শুধু ওর চেহারাটাই ভাসে। ওকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না। তার জন্য তুই সবকিছু ছেড়ে
দিওয়ানা হয়ে বসে থাকবি এটা কি ভালো? ভালো-মন্দ জানিনা আমি কি করবো তাও জানিনা। মিলি ভার্সিটিতে সজীবের

সম্মুখীন হয়। সজীব জুঁই কেন ভার্সিটি আসে না জানো? আমি কি করে জানব? হ্যাঁ তাইতো তুমি কি করে জানবা! যার মন
পাওয়ার জন্য এত আকুলতা ব্যাকুলতা তার মনের হদিস নাই। উপমায় কি বুঝাতে চাচ্ছ? যা বলার ডাইরেক্ট বলো।
ডাইরেক্ট শুনতে চাও তাহলে শোনো, একবারও খোঁজ নিয়েছো জুঁই কেন ভার্সিটি আসেনা?
সেটা আমার তো জানার দরকার নেই। কেন দরকার নেই? যে মানুষটার জন্য জুঁইয়ের বেহাল অবস্থা সেই যদি একথা
বলে সেটা একরকম নিষ্ঠুরতা। আমার জন্য জুঁইয়ের আবার কি অবস্থা? জুঁই খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে, পড়ালেখাও
আর করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সজীব নির্লিপ্ততা ছেড়ে সিরিয়াস হয়। কি বলো এসব! তুমি আমাকে আগে বলনি
কেন? এখন তো বললাম। ‌দেখো এখন কিছু করতে পারো কিনা। সজীব মিলির কাছ থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে ফোন দেয়
জুঁইকে। ফোন রিসিভ করে জুঁই বুঝতে পারে সজীবের কন্ঠ। কথা বলতে পারে না সে। সজীব শুধু গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের
শব্দ শুনতে পায়। জুঁই কথা বলো? সমস্ত অনুভবে তীব্র আলোড়ন জুঁইয়ের। কি বলবো বলো? কান্না জড়িত কন্ঠে বলে,
আমার কথা কি তুমি শুনতে চাও? হ্যাঁ শুনতে চাই। আমার তো সেই একই কথা আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে
ছাড়া এই পৃথিবীতে আমি থাকতে চাই না। আমাকে ছাড়া যখন পৃথিবীতে তুমি থাকতে চাও না সেই আমি তোমাকে হারাই
কিভাবে! জুঁই অবাক হয় সজীবের কথা শুনে। জুঁই আমি তোমাকে ভালোবাসি। সত্যি বলছো তুমি আমাকে ভালোবাসো।
প্রমাণ নিতে চাও? কি প্রমাণ দিলে তুমি বিশ্বাস করবে? সজীব কোন প্রমাণ দিতে হবে না। ভালোবাসা কোন প্রমাণ দিয়ে
হয় না। ভালোবাসা হয় ভালোবাসা দিয়ে, ভালোবাসা হয় ভালোবাসার উপলব্ধি দিয়ে। সজীব তুমি থাকো আমি এক্ষুনি
ভার্সিটিতে আসছি। জুঁই ভার্সিটি আসে। এসে সজীবকে দেখতে পেয়ে প্রকম্পিত কন্ঠে বলে, যে হাহাকারে ভুগছিলাম তোমার
সানিধ্যে হয়তো তা প্রশমিত হবে। সজীব বলে,‌ তোমার আর সে ভয় নেই। বান্ধবীর উল্লসিত মন দেখে মিলিও উচ্ছ্বাসিত
হয়। জুঁই সজীবের দিকে তাকিয়ে, সজীব তোমার ভালোবাসা না পেলে এই জুঁই, জুঁই থাকত না, জুঁই মরে যেত। এই কথা
মুখে উচ্চারণ করো না।‌ এখন তো পেয়েছ। না পাওয়ার যন্ত্রনার কথা মন থেকে মুছে ফেলো। পড়ালেখা আর দু’জন
দু’জনকে সময় দেওয়ার মাঝে বিমূর্ত হতে থাকে তাদের প্রেমময় ভালোবাসা।
রাবেয়া মেয়ে জুঁইয়ের চলাফেরার মধ্যে সব সময় একটা তাড়াহুড়ার ভাব লক্ষ করে। জুঁই তোকে একটা কথা বলার ছিল।
জুঁইয়ের কথা বলার স্পিড এতোই ছিল রাবেয়া মেয়েকে না বলে পারল না। তুই এত তাড়াহুড়া দেখালে আমি বলি কি করে!
এগুলি ধীরেসুস্থে বলার কথা। আর বিষয়টা হচ্ছে তোর, তোকেই তো বলতে হবে। মা বলো কি বলতে চাও? মায়ের কাছে
বসবি ধীরে সুস্থে কথাটা শুনবি আমারও বলতে ভালো লাগবে। জুঁই মাকে আদর করে ধরে। ঠিক আছে মা তুমি যা বলতে
চাও বলো।
ফাহিম বাংলাদেশে আসছে।
ফাহিমকে মা?
বলি, বলি করে তোকে কথাটা বলা হয়নি। ফাহিমের সঙ্গে তোর ছোটকালে বিয়ে হয়েছে।
মা তুমি একথা আগে বলনি কেন?
আমি আর এলিনা ছিলাম অন্তরঙ্গ বান্ধবী। আমাদের চিন্তা ছিল এই বন্ধুত্ব কি করে আজীবন টিকিয়ে রাখা যায়। বন্ধুত্বকে
আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করা গেলে সেটা সম্ভব। প্রস্তাবটা এলিনার ছিল। বিয়েটা তখনই হয়। যখন তোর বয়স দুই
বছর আর ফাহিমের চার বছর। আমাদের দু'জনের কথা ছিল তোরা বড় হওয়ার পর বিষয়টা জানাবো। মা তোমার এই
ব্যাপারটা আগে বলা উচিত ছিল। মানুষ বড় হবার পর তাদের চিন্তা ভাবনা এক থাকে কিনা সেটা তোমাদের ভেবে দেখা
উচিত ছিল। আমি ফাহিমকে মানতে পারবো না। কি বলিস তুই! ফাহিমের দিক থেকে তো কোন সমস্যা নেই। এমন ছেলে
হয় না লাখে একজন। ছেলে যেমন সুন্দর, তেমন তার বংশ পরিচয়, তেমন তার স্ট্যাটাস। মা ফাহিম যেমনি হোক আমি
ওকে গ্রহণ করতে পারবো না। আমি একজনকে ভালবাসি। তুই বলিস কি! কে জানে কোথাকার কোন ছেলেকে তুই
ভালবাসিস। কতটুকু জানিস তার সম্পর্কে। তোর এই ইচ্ছা কখনোই বাস্তবায়িত হবে না। আমেরিকা থেকে ফাহিম
আগামীকালই দেশে পৌঁছাবে। ওরা কত মহাসমারোহ করে আসছে। এমন অবস্থায় তুই আবোল তাবোল কোন কিছু নিয়ে
ভাবিস না। মন থেকে ঝেড়ে ফেলে দে ওইসব চিন্তা। বিষয়টা মোটেই আবোল তাবোল নয়। সজীবের ভালোবাসার জন্য
আমিই পাগল ছিলাম সজীব নয়। সজীবকে এখন আমি কিছুতেই হারাতে চাই না। রাবেয়ার কণ্ঠস্বর কঠিন হয়। শোন জুঁই
ভার্সিটি তো দূরের কথা তোর বাসার থেকে বের হওয়া আজ থেকে বন্ধ। মা আমি ছোট নয়, আমি এখন বুঝতে শিখেছি

ভালো মন্দ। তাই কোন কিছু আমার উপর জোর করে চাপিয়ে দিও না। আমি এখনই সজীবের কাছে যাব। রাবেয়া‌ জুঁইয়ের
হাত থেকে ফোনটা নিয়ে রুমের বাহির থেকে ছিটকিনি বন্ধ করে দেয়। জুঁই মা, মা বলে চিৎকার করে। মা দরজা খোলো।
আমার রুমের দরজা বন্ধ করে রাখলেও আমার মনের দরজা সজীবের জন্য কখনোই বন্ধ হবে না।
ফাহিম দেশে আসে। এসে জুঁইদের বাসায় যায়। ফাহিমকে দেখে রাবেয়া খুশিতে আত্মহারা। সুদর্শন ফাহিমকে দেখে মনে
মনে ভাবে মেয়ে তার কতটা সৌভাগ্যবতী। ভাগ্য গুনে এমন স্বামী পেয়েছে। রাবেয়া মেয়ের দরজা খুলে বলে, এসে দেখে
যা কত সুন্দর ছেলে তোর স্বামী। ওর সামনে গিয়ে উল্টা পাল্টা কিছু করবি না। কোন কিছু বুঝতে দিবি না। জুঁইয়ের সেই
একই কথা, মা তুমি যত কিছুই বলো আমি সজীবকেই চাই।
স্বামী থাকতে অন্য পুরুষের দিকে দৃষ্টি দেওয়া মহাপাপ। মা পাপের কথাই যদি বলো, তাহলে একথা গোপন রাখেছিলে
কেন? আগে বলো নাই কেন? আগে জানিস নাই তাই ভুল করেছিস! এখন তো জানলি এখন আর ভুল করিস না। রাবেয়া
সহজ সমাধান দিয়ে দেয়। তুই ফাহিমকে একবার দেখ তারপর আমাকে বলিস। জুঁই চোখ মুছে মায়ের পিছে পিছে যায়।
ফাহিমকে দেখে অবাক হয় জুঁই। তার মা যেরকম বলছে ঠিক সেরকমই। ফাহিম সুদর্শন হলে তাতে কি আসে যায়! সে তো
ভালোবাসে সজীবকে। জুঁইকে দেখে ফাহিম ভাবে, সে কল্পনায় জীবন সঙ্গিনীর যেমন ছবি এঁকেছিল জুঁই ঠিক সেরকম বরং
তার চেয়ে বেশি। এরই মাঝে কলিং বেল বাজে। দরজা খুলে রাবেয়া তার পরিচয় জানতে চাইলে সজীব তার পরিচয়
দেয়।
রাবেয়া কি করবে বুঝতে পারছে না। দরজা থেকেই বিদায় করবে না ভিতরে ডাকবে। এক পর্যায়ে সজীবকে ভেতরে নেয়
বিষয়টি দ্রুত সমাধানে জন্য। সজীব, ফাহিম, জুঁই তিনজনই সামনা সামনি। রাবেয়া কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে
দ্রুতই পরিচয় করিয়ে দেয়। এ হচ্ছে জুঁইয়ের স্বামী ফাহিম। বাবা ফাহিম শোনো, সজীব হচ্ছে আমার এক বোনের ছেলে।
খালাম্মার খোঁজ নিতে এসেছে। সজীব এমন পরিস্থিতিতে অবাকের পর অবাক হয়! তার মুখ থেকে কোন কথা বের হয়
না। রাবেয়া মেয়েকে ইশারা ইঙ্গিতে সবকিছু চেপে যেতে বলে, কোন কিছু ফাঁস করবিনা। জুঁইয়ের অন্তর ফেটে যায়।
ভালোবাসার মানুষের সম্মুখীন নিজের অজান্তের স্বামীকে নিয়ে। জুঁই আর সজীবের মুখ মলিন থাকলেও ফাহিমের মুখ
আনন্দে উজ্জ্বল। ফাহিম নিজে থেকেই হাতটি বাড়িয়ে দিয়ে হ্যান্ডশেক করে সজীবের সঙ্গে। ফাহিম বলে, দীর্ঘদিনের লালিত
ভালোবাসা আজ পূর্ণ হতে চলেছে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় সজীবের কাছে ধীরে ধীরে বিষয়গুলো পরিষ্কার হয়। সে তার হৃদয়
ভাঙার শব্দ কাউকে শুনতে দিতে চায় না। বুকের মধ্যে তোলপাড় করা ব্যথা নিয়ে ভাবে দ্রুত তার প্রস্থান করা উচিত।
বিদায়ের মুহূর্তে সে বলে, ভালোবাসার বন্ধন অটুট থাক। মনে মনে বলে, পৃথিবীতে অনেক গভীর ভালোবাসা পূর্ণতা না
পেয়ে সময়ের গর্ভে হারিয়ে যায়। একে অপরকে ভালবাসলেও নিয়তি তাদের মিলন ঘটায় না। তেমনি হয়েছে জুঁই আর
সজীবের জীবনে।

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ